বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন কারণে ত্বকে প্রাকৃতিকভাবে বলিরেখা তৈরি হয়। এটাই স্বাভাবিক। কারণ বয়স বাড়তে থাকলে ত্বক সাধারণত শুষ্ক, পাতলা এবং কম স্থিতিস্থাপক হয়ে যায়। তবে কারও কারও আবার অল্প বয়সেই ত্বক কুঁচকে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অল্প বয়সে ত্বক কুঁচকে যাওয়ার কয়েকটি কারণ আছে। চাইলে তা প্রতিরোধ সম্ভব।
সূর্যালোক : সূর্যালোক থেকে নির্গত অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের গভীরতম স্তরে প্রবেশ করে কোলাজেনকে ভেঙে ফেলতে পারে। এর ফলে ত্বক নমনীয়তা হারায়। ভিতরে বা বাইরে কাজ করলে, গাড়ি চালালে বা জানালার পাশে বসলে ত্বকের ধরণ অনুযায়ী উপযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। সূর্যের আলো পরোক্ষভাবেও ত্বকে বলিরেখা ফেলতে পারে। যারা রোদে কাজ করেন তাদের ত্বকে দ্রুত বলিরেখা পড়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে ত্বক ঢেকে রাখে এমন কাপড়-যেমন লম্বা হাতার জামা বা টুপি পরলে বলিরেখা এড়ানো যায়।
ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন : ধূমপান ত্বকে রক্ত প্রবাহ হ্রাস করে, ত্বকের বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করে। অতিরিক্ত অ্যালকোহল পানে ত্বক শুকিয়ে যায়। ফলে ত্বক শক্তি এবং নমনীয়তা হারায়। এর ফলে ত্বক ঝুলতে শুরু হওয়ার সাথে সাথে বলিরেখা পড়তে শুরু করে। এ কারণে ত্বকের বার্ধক্য রোধে মদ্যপান ও ধূমপান ত্যাগ করুন।
মুখভঙ্গি : নাক কুঁচকানো বিশেষ করে মুখের সক্রিয় নড়াচড়া যেমন- ঘন ঘন ভ্রু কুঁচকানো এবং ভ্রুকুটি করাও ত্বকে বলিরেখা তৈরি করতে পারে। ভারতের কসমেটিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা.করুণা মালহোত্রায় ভাষায়, ঘন ঘন মুখভঙ্গি পরিবর্তনে ত্বকের কোষগুলি চেপে যায় এবং নমনীয়তা হারাতে থাকে। অনেকেরই নাকমুখ কুঁচকে রাখার প্রবণতা আছে। এই নেতিবাচকে আচরণ পরিবর্তন করে বলিরেখা পড়া রোধ করতে পারেন।
মানসিক চাপ: মানসিক চাপের কারণে ত্বক নমনীয়তা হারায়। ফলে ত্বকে দ্রুত বলিরেখা পড়ে।
শুষ্ক ত্বক : শুষ্ক ত্বকে বলিরেখার ঝুঁকি বেশি। এ কারণে বলিরেখা রোধ করতে দিনে অন্তত দুবার নিয়মিত ময়েশ্চারাইজ করা উচিত। এতে ত্বকের শুষ্কতা প্রতিরোধ করে, যার ফলে বলিরেখা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি কমে।
ঘুমের অভাব : ঘুমের অভাব ত্বকের বার্ধক্য ত্বরান্বিত করে।
অত্যাধিক প্রসাধনী ব্যবহার : অতিরিক্ত প্রসাধনী ব্যবহার ত্বকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। এর ফলে ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়, রোমকূপের ছিদ্র আটকে যায় এবং ত্বকে দ্রুত বলিরেখা দেখা দেয়।
পুষ্টির ঘাটতি: শরীর যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন না পায় তাহলে ত্বক শুষ্ক হয়ে বলিরেখা পড়তে শুরু করতে পারে। এ কারণে খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি, ডি, বি, ই এবং কে অন্তর্ভুক্ত করুন। স্বাস্থ্যকর ত্বক বজায় রাখার জন্য এসব ভিটামিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও ত্বকের বলিরেখা রোধে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজিং, সানস্ক্রিন ব্যবহার করা, ভালো খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ কমানো, নিয়মিত ব্যায়াম করা, ধূমপান ত্যাগ করা এবং অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।