ব্যথা পেলে বরফ ঘষবেন নাকি গরম সেঁক দেবেন

0
263

নিত্যনৈমিত্তিক কাজে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত একটু আধটু ব্যথা পেয়ে থাকে সবাই। কেউ কেউ তাৎক্ষণিক আরাম পেতে ব্যথার স্থানে বরফ ঘষেন আবার কেউ কেউ গরম সেক দেন।

কিছুক্ষণে সেই ব্যথা কমে গেলেও অনেক দিন পর হুটহাট করে জেগে উঠে পুরোনো ব্যথা। তবে কোন ব্যথায় কী রকম সেঁক দেওয়া উচিত, সে বিষয়ে অনেকেই জানেন না। চিকিৎসকেরা বলেন, খেলতে গিয়ে, ধাক্কা লেগে রক্ত জমে গেলে ঠান্ডা সেঁক দেওয়াই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু হাড়ের বা পেশির ব্যথা কমাতে গেলে কিন্তু গরম সেঁক কার্যকরী।

তাই কখন কোন ব্যথায় কোনটা দেয়া উচিত আর কীভাবে দেয়া উচিত তা জেনে রাখা ভালো।

কোন ব্যথায় গরম সেঁক দেবেন

সাধারণত ঘাড়ব্যথা, কোমরব্যথা বা হাঁটু ব্যথার মতো সমস্যায় কাজে দেয় উষ্ণতা। দীর্ঘমেয়াদি ব্যথায় ভুগলে হটওয়াটার ব্যাগ বা হিটিং প্যাডের মতো অনুষঙ্গ প্রয়োজন।

শুকনো তোয়ালে গরম করে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে সেঁক দেওয়া যেতে পারে। না হলে তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে নিংড়ে নিয়েও সেঁক দেওয়া যায়। এ ছাড়া বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি হট ব্যাগে গরম পানি ভরে সেক দেয়া যায়। অনেকে আবার হিটিং প্যাড দিয়েও ব্যথার স্থানে সেঁক দেন।

গরম সেঁক দেওয়ার আগে সতর্কতা

১. উত্তাপটা হতে হবে কোমল ও সহনীয়। আরামদায়ক উত্তাপ চিকিৎসার কাঙ্ক্ষিত তাপমাত্রা। তাপমাত্রা বেশি হলে বরং হিতে বিপরীত হয়।

২. হিটিং প্যাড বা হিটিং জেল ব্যবহারের সময় সরাসরি দেহের ত্বকের সংস্পর্শে না রেখে ওই স্থানের ত্বকের ওপর আগে একটি তোয়ালে বা কাপড় জড়িয়ে নিন।

৩. গরম সেঁকে আঘাত পাওয়া অংশে রক্ত চলাচল বাড়ে। ফলে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ে। তাতে ব্যথা দ্রুত কমে।

৪. মূলত হাড়ের সংযোগস্থলের ব্যথা বা পেশিতে টান ধরার ব্যথায় এটি খুব কার্যকর।

৫. দেহের সব অংশে গরম সেঁক দেওয়া যায় না। তাই কোথায় সেঁক দেবেন, সেই বিষয়ে আগে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নেওয়াই ভাল।

কোন ব্যথায় ঠান্ডা সেঁক দেবেন

আঘাত লেগে ত্বকের উপর রক্ত জমাট বাঁধলে বরফের সেঁক দেন অনেকেই। কেউ আবার রাবারের আইস ব্যাগে বরফ ভরেও ঠান্ডা সেঁক দেন। খেলতে গিয়ে চোট লাগলেও বরফ সেঁক দেওয়া হয়।

ঠান্ডা সেঁক দেওয়ার আগে সতর্কতা

১. সরাসরি ত্বকে বরফ না ঘষাই ভালো। একটা কাপড়ে বরফ জড়িয়ে নিয়ে সেই কাপড় ব্যথার স্থানে ঘষলেই অনেকটা আরাম পাওয়া যাবে।

২. আইস ব্যাগে বরফ বা ঠান্ডা পানি নিয়ে ব্যথার স্থানে কিছুক্ষণ রেখে দিন।

৩. প্রচণ্ড জোরে আঘাত লাগলে সেই ব্যথা সহ্য করতে না পারলে ঠান্ডা সেঁক দেওয়া যেতে পারে। কারণ, প্রাথমিক ভাবে আঘাত লাগা স্থান অসাড় করে দিতে পারে বরফ। আর তাতেই ব্যথা সাময়িক ভাবে কমে যায়।

৪. ফোলা ভাব বা প্রদাহ কমাতে ঠান্ডা সেঁক দেওয়া হয়।

৫. রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে ঠান্ডা সেঁক।

৬. গরম সেঁকের তুলনায় ঠান্ডা বরফের সেঁক নিরাপদ। তারপর ও শরীরের কোথায় কোথায় ঠান্ডা সেক দেয়া যাবে বা যাবে না সে সম্পর্কে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভাল।