কচু কেন খাবেন ?

0
293

কচু মানুষের চাষকৃত প্রাচীন উদ্ভিদগুলোর মধ্যে একটি। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব এলাকায় কম বেশি কচু দেখতে পাওয়া যায়। রাস্তার পাশে, বাড়ির আনাচে কানাচে, বিভিন্ন পতিত জমিতে অনাদরে-অবহেলায় অনেক সময় কচু জন্মাতে দেখা যায়। কচু বহু জাতের হয়ে থাকে। কয়েকটি জাতের কচুর প্রচুর পরিচর্যা দাবী করে। বনে জঙ্গলে যেসব কচু আপনা আপনি জন্মায় সেগুলকে সাধারণত “বুনো কচু” বলা হয়। এ ধরনের কচুর অনেকগুলো জাত মানুষের খাবারের উপযোগী নয়। খাবার উপযোগী জাতগুলোর অন্যতম হচ্ছে মুখীকচুপানিকচুপঞ্চমুখী কচুপাইদনাইলওলকচুদুধকচুমানকচুশোলাকচু ইত্যাদি। সবজি হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও সৌন্দর্যের কারণে কিছু কিছু প্রজাতির কচু টবে ও বাগানে চাষ করা হয়। এদের মধ্যে কতগুলোর রয়েছে বেশ বাহারী পাতা, আবার কতগুলোর রয়েছে অত্যন্ত সুন্দর ফুল।

কচুর উপকারিতা

কচু শাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ‘এ’ থাকায় রাতকানা রোগ প্রতিরোধে কচু খুবই কার্যকর। চুলের ভঙ্গুরতা বন্ধতেও কচুর উপকারিতা অনেক। কচুতে আয়োডিনের পরিমাণও অনেক। যাদের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি রয়েছে তাদের জন্য কচু অনেক উপকারী। কচুর লতিতে চিনির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরাও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন এটি।

কচুর গুণাগুণ

কচুর শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ,বি,সি,ক্যালসিয়াম ও লৌহ। ভিটামিন এ জাতীয় খাদ্য রাতকানা প্রতিরোধ করে আর ভিটামিন সি শরীরের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। তাই শিশুদের ছোট বেলা থেকেই কচুর শাক খাওয়ানো উচিত। কচুতে আছে আয়রন,যা রক্ত শূন্যতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। যাদের রক্ত শূন্যতা আছে তারা নিয়মিত কচু খেলে উপকার পাবেন। কচুতে আছে নানা রকমের ভিটামিন যা গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য দারুণ উপকারি। কচু দামেও বেশ সস্তা, তাই দরিদ্র পরিবারের গর্ভবতী মহিলারা ভিটামিন ও আয়রনের চাহিদা পূরণের জন্য কচু খেতে পারেন। কচুর ডাঁটায় প্রচুর পরিমানে পানি থাকে,তাই গরমের সময় কচুর ডাঁটায় রান্না করে খেলে শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ হয়। কচুর শাকে পর্যাপ্ত পরিমানে আঁশ থাকে যা হজমে সহায়তা করে। জ্বরের সময় রোগীকে দুধ কচু রান্না করে খাওয়ালে জ্বর দ্রুত ভাল হয়। কচুতে আছে প্রচুর ফাইবার, ফোলেট ও থায়ামিন যা মানব শরীরের জন্য অনেক দরকারি উপাদান। কচু খেলে রক্তের কোলেস্টরল কমে তাই উচ্চরক্ত চাপের রোগীদের জন্য ওল কচুর রস বেশ উপকারী। নিয়মিত কচু খেলে কোলন ক্যান্সার ও ব্রেষ্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। কচুতে আছে অক্সলেট নামক উপাদান। তাই কচু শাক বা কচু খেলে অনেক সময় গলা চুলকায়। তাই কচু রান্না করার সময় লেবুর রস বা সিরকা ব্যবহার করা উচিত। তবে যাদের শরীরে অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের কচু না খাওয়াই ভালো। কচু খেলে শরীর পুষ্ট হয় এবং শুক্র বৃদ্ধি পায়। কান ও গলার রুক্ষতা বা সুড়সুড়ি দূর করে। এটি আমাশয় রোগে বিশেষ উপকারী।

তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া