পিরিয়ডে পেটে ব্যথায় ভোগেন অধিকাংশ নারী। যদিও এটি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, তবে মাসের সেই সময়ে আসা সেই বাধা এবং উপসর্গলি মোকাবিলা করা কোনো সহজ বিষয় নয়। পিরিয়ডের সময় জরায়ুর আস্তরণ ঝরে যায়, যার ফলে ২-৭ দিন রক্তপাত হয়। এটি শুধু পেটে ব্যথারই কারণ নয়, সেইসঙ্গে পেট ফাঁপা, খিঁচুনি, বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, মেজাজের পরিবর্তন এবং ভুলে যাওয়ার মতো সমস্যাও ডেকে আনে। তবে চিন্তা করবেন না। আপনার জীবনযাপনে পরিবর্তন এনে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া অনেকটাই সম্ভব। পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা দূর করতে পান করতে পারেন এই ৫ পানীয়-
১. ক্যামোমাইল চা
আপনি নিশ্চয়ই ক্যামোমাইল চায়ের প্রশান্তিদায়ক বৈশিষ্ট্যের কথা শুনেছেন? এই চা এমন মানুষেরা বেশি পান করে যাদের রাতে ঘুমাতে সমস্যা হয়। কিন্তু আপনি কি জানেন যে ক্যামোমাইল চা আপনার পিরিয়ডের ব্যথার জন্যও একটি কার্যকরী প্রতিকার? ক্যামোমাইল চা এমন যৌগ দিয়ে পরিপূর্ণ যা প্রাকৃতিক পেশী শিথিলকারী হিসাবে কাজ করে। এটি অস্বস্তি কমাতে এবং পেটে ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়াও ক্যামোমাইল চায়ের হালকা প্রশান্তিদায়ক প্রভাব রয়েছে যা আপনার মনকে শিথিল করে এবং আপনার পিরিয়ডের সময় রাতের ঘুম ভালো হতে সাহায্য করে।
২. আদা চা
আদা আপনাকে পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। আদার প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আপনার জরায়ুর পেশীগুলিকে শিথিল করতে এবং ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে। তাছাড়া আদা অন্যান্য পিরিয়ড সমস্যা যেমন বমি বমি ভাব এবং পেট ফাঁপা কমাতেও কাজ করে। এক কাপ আদা চা পান করুন। এটি আপনাকে পিরিয়ডের সময় কিছুটা হলেও প্রশান্তি দেবে।
৩. হট চকোলেট
আপনি যদি পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় খোঁজেন তাহলে চকোলেট আপনার কাজে আসতে পারে। ডার্ক চকোলেটে রয়েছে আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রক্ত প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং জরায়ুর পেশী শিথিল করতে সাহায্য করে। চকোলেটে পলিফেনলও রয়েছে, এটি একটি রাসায়নিক যৌগ যা শরীরের প্রদাহ কমায়। গলানো ডার্ক চকোলেট, ভ্যানিলা এসেন্স, এক চিমটি লবণ এবং দুধ দিয়ে এক কাপ স্বাস্থ্যকর, আরামদায়ক হট চকোলেট তৈরি করতে পারেন। তবে চিনি মেশাবেন না।
৪. হলুদ দুধ
অসুস্থ কারও খাবারের তালিকায় হলুদ মেশানো দুধ রাখার প্রচলন বেশ পুরনো। এর কারণ হলো এই পানীয় বেশ উপকারী। প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের কারণে হলুদ দুধ আপনার পিরিয়ডের ব্যথা কিছুটা কমাতে সাহায্য করতে পারে। এই মসলায় রয়েছে কারকিউমিন, এটি একটি সক্রিয় যৌগ যা শরীরে প্রদাহজনক রাসায়নিকের উৎপাদন কমাতে পারে। এক কাপ উষ্ণ হলুদ দুধ পান করলে তা আপনার টানটান পেশীগুলিকে প্রশমিত করতে সাহায্য করবে এবং ব্যথা দূর করে আরাম দেবে।
৫. পেপারমিন্ট চা
শুধুমাত্র সতেজই নয়, এক কাপ পেপারমিন্ট চা খেলে আপনার পেশী শিথিলও হতে পারে। পেপারমিন্ট চায়ে মেন্থল, অ্যান্টিস্পাসমোডিক, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যানালজেসিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা প্রাকৃতিক ব্যথা উপশমকারী হিসাবে কাজ করে। পিপারমিন্ট চা শান্ত এবং সতেজ করে। আপনাকে যা করতে হবে তা হলো এক কাপ পানিতে কয়েকটি পুদিনা পাতা দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। এবার তাতে চুমুক দিন, এটি আপনাকে পিরিয়ডের সময় আরাম দিতে সাহায্য করবে।