শীত কিংবা গরম, সারা দিনে এক বার চায়ের কাঁপে চুমুক না দিলে অনেকের দিনই চলে না। ক্লান্তি দূর করে শরীরকে চাঙ্গা করতে চায়ের জুড়ি মেলা ভার। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইদানীং অনেকেই খাদ্য তালিকায় গ্রিন টি রাখেন। কেউ আবার লিকার চা ছাড়া খান না।
এক্ষেত্রে অনেকেই মনে করেন, স্বাস্থ্য়গুণে গ্রিন-টি হলো একদম সেরার সেরা। আবার অনেকের ধারণা, গ্রিন টি উপকারী, তবে গুণের নিরিখে লিকার চা-ও কিছু কম যায় না। কিন্তু পুষ্টিবিদরা কী বলছেন? চলুন জেনে নিই স্বাস্থ্যগুণে কোন চা-কে সেরা বলছেন তারা।
গ্রিন টি’র উপকারিতা
গ্রিন-টি’তে রয়েছে এপিগ্যালেটো ক্যাটেচিন গ্যালেট নামক একটি উপাদান। এই উপাদান কিন্তু শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। ফলে নিয়মিত গ্রিন-টি খেলেই ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেশার, হার্ট ডিজিজ থেকে শুরু একাধিক জটিল ক্রনিক অসুখের ফাঁদ এড়ানো সম্ভব হবে সহজেই। পাশাপাশি, এই চায়ে ক্যাফিনের পরিমাণ বেশ কম থাকে। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপযোগী।
এছাড়া গ্রিন-টি’তে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা বিপাকের হার বাড়ানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই নিয়মিত গ্রিন-টি’র কাপে চুমুক দিলে যে ওজন কমবে দ্রুত গতিতে, তা তো বলাই বাহুল্য!
গুণের রাজা লিকার চা
পুষ্টিবিদরা বলছেন, লিকার চায়ে রয়েছে থিওফাইলিনের মতো একটি অত্যন্ত উপকারী উপাদান, যা কিনা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে ওজন কমানোর কাজেও এই উপাদানের জুড়ি মেলা ভার।
এছাড়াও লিকার চায়ে মজুত রয়েছে কিছুটা পরিমাণে ক্যাফিন, যা কিনা মুড বুস্ট করার কাজে একাই একশো। তাই মন ও শরীরের খেয়াল রাখতে নিয়মিত এই চা পান করতেই পারেন। এতেই মিলবে উপকার।
পুষ্টিবিদদের তথ্যমত্র, গ্রিন-টি ও লিকার চায়ের লড়াইয়ে গ্রিন-টি অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। কারণ লিকার চায়ে কিছু ক্ষতিকর উপাদান থাকলেও গ্রিন-টি’তে তা অনুপস্থিত। তাই নিয়মিত গ্রিন-টি’র কাপে চুমুক দিলেও ক্ষতির আশঙ্কা অনেকটাই কম।
শুধু তাই নয়, লিকার চায়ের থেকে গ্রিন-টি’তে অনেকটা বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। তাই শরীরের হাল ফেরানোর কাজেও গ্রিন-টি’র জুড়ি মেলা ভার।
গ্রিন-টি বানানোর নিয়ম
অনেকেই ফুটন্ত পানিতে গ্রিন-টি মিশিয়ে পান করেন। এমনটা করলে কিন্তু চায়ের কোনো উপকারই মিলবে না বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের কথায়, গ্রিন-টি থেকে উপকার পেতে চাইলে আপনাকে হালকা গরম পানিতে গ্রিন-টি মিশিয়ে পান করতে হবে।
এছাড়া এই পানীয়তে লেবু, চিনি বা দুধ মেশানো যাবে না। এই নিয়মগুলো মানলেই গ্রিন-টি’র সমস্ত গুণ মিলবে। পাশাপাশি গ্রিন-টি বা লিকার চা পান করার পর সেই কাপের অন্তত তিন কাপ পানিপান করতে হবে। এই কাজটা করলেই কিন্তু চায়ের সমস্ত উপকার মিলবে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।