মাইগ্রেনের ব্যথা সাধারণত মাথার যেকোনো এক পাশে হয়ে থাকে। সঙ্গে থাকে আনুষঙ্গিক নানা উপসর্গ। কারও বমিভাব হয়, কেউ আবার আলো বা শব্দ সহ্য করতে পারেন না।
মাইগ্রেনের কারণে বারবার ব্যথার ওষুধ খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়ে, অতিরিক্ত ওষুধের কারণে মাথাব্যথা বাড়তেও পারে। ব্যথা হলেই ওষুধ খাচ্ছেন, আবার এত ওষুধ খাচ্ছেন তারপরও ব্যথা হচ্ছে ঘন ঘন, ফলে আরও ওষুধ প্রয়োজন হচ্ছে—এ এক ভয়ংকর চক্র।
কিন্তু গবেষণা বলছে, ওষুধ কমিয়ে বরং জীবনধারার ইতিবাচক পরিবর্তনেই বারবার মাইগ্রেনের ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি কমানো যায়। তাই যাঁরা মাইগ্রেনের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন, তাঁরা জেনে নিন, কী ধরনের জীবনাচরণ আপনার ব্যথা কমাবে।
চাই ভালো ঘুম
রোজ নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমান এবং ঘুম থেকে উঠুন। ছুটির দিন বা বাড়িতে অতিথির আগমনেও ঘুমের সময় এদিক-ওদিক করবেন না।
ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে টেলিভিশনসহ সব ধরনের ডিজিটাল পর্দার কাজ শেষ করুন।
ঘর অন্ধকার করে ঘুমান। ঘরের তাপমাত্রা রাখুন আরামদায়ক।
রোজ রাতে শিথিলকরণ ব্যায়াম (রিল্যাক্সেশন এক্সারসাইজ) করুন।
ঘুম না এলে বিছানায় অকারণ শুয়ে থাকবেন না।
দিনের ঘুম এড়িয়ে চললে ভালো।
ঘুমের কোনো সমস্যা থাকলে (যেমন অনিদ্রা, নাক ডাকা প্রভৃতি) চিকিৎসা নিন।
ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাস
অল্প করে হলেও ব্যায়াম করুন। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
দীর্ঘসময় খালি পেটে থাকবেন না। খাবার খেতে হবে সময়মতো। ঘুম থেকে ওঠার এক-আধ ঘণ্টার মধ্যেই নাশতা করুন।
চকলেট, স্মোক ফিশ, কৃত্রিম চিনি, টেস্টিং সল্ট, চর্বি, পুরোনো পনির প্রভৃতির কারণে মাইগ্রেনের ব্যথার ঝুঁকি বাড়তে পারে। পাউরুটিতে থাকা ইস্ট এক্সট্র্যাক্টও দায়ী হতে পারে। তবে আপনার ব্যথার সঙ্গে কোনো খাবারসম্পর্কিত থাকলে কেবল সেটিই এড়িয়ে চলুন। বাকিগুলো খেতে বাধা নেই।
আরও যা মানবেন
পর্যাপ্ত পানি খান। তৃষ্ণা পাওয়ার আগেই পানি খান।
মাথাব্যথার সময় চা-কফি খেলে একটু ভালো লাগে অনেকেরই। তবে সারা দিনে দুইবারের বেশি চা বা কফি খাওয়া যাবে না। এতে বারবার ব্যথা হতে পারে। অবশ্য দীর্ঘদিন ধরে বেশি বেশি চা বা কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটি হুট করে বাদ দেবেন না, বরং ধীরে ধীরে কমিয়ে আনুন। রোজ ব্যথা হলে ধীরে ধীরে চা-কফি একেবারে বন্ধ করে দিন।
ক্যাফেইন–সমৃদ্ধ ওষুধ সপ্তাহে দুই দিনের বেশি খাবেন না।
অ্যালকোহল ও ধূমপান এড়িয়ে চলুন।
মানসিক চাপ কমাতেই হবে। মন ভালো রাখুন। একই সঙ্গে একাধিক কাজের চাপ নেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
মাসে কত দিন ব্যথা হচ্ছে, কতটা তীব্র ব্যথা হচ্ছে, কোন ওষুধ কতবার নিতে হচ্ছে—সব লিখে রাখুন এবং চিকিৎসককে জানান।
শোয়া, বসা, হাঁটাচলায় স্বাস্থ্যকর দেহভঙ্গি বজায় রাখুন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।