ব্যস্ত জীবনযাত্রায় অন্যের ভালো মন্দ শোনার মত কারও বিশেষ সময় থাকে না। সবাই নিজের সমস্যা, নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। সেই জায়গায় কখনও মনে হতেই পারে আপনি কথা বলার মানুষ পাচ্ছেন না। আশেপাশে অনেকেই রয়েছে কিন্তু তারপরেও একটা নিঃসঙ্গতা ঘিরে ধরছে আপনাকে। সেই সময় আপনার সব থেকে ভালো বন্ধু হয়ে উঠতে পারে কাগজ কলম।
নিজের মনের কথা কাউকে বলতে চেয়েও না পারলে ডায়েরির পাতায় লিখে রাখুন। ডায়েরি লেখার এই সময় আপনার একেবারে নিজের সময়। নিজের সাথে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য, নিজেকে আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য ডায়েরি লেখা শুরু করুন।
একটা সময় মানুষের ডায়েরি লেখার অভ্যাস ছিল। প্রযুক্তির এই যুগে সেই অভ্যাস হারিয়ে গেছে। কিন্তু নিয়মিত ডায়েরি লেখার অভ্যাস কতটা ইতিবাচক তা জানিয়েছেন মনোরাগ বিশেষজ্ঞরা।
নিয়মিত ডায়েরি লিখলে যা হয়-
মানসিক চাপ কমে : এমন অনেক কথাই রয়েছে যা কাউকে বলা যায় না। আবার এমন কিছু কথাও থাকে যেটা আপনি বলতে চান কিন্তু হয় শোনার মত মানুষ নেই, কিংবা ভরসাযোগ্য মানুষের অভার থাকে। তাই নিজের সঙ্গেই কথা বলুন। আপনি ডায়েরি লিখছেন মানে নিজের দোষ গুণ ভালো খারাপ সবটা স্বীকার করছেন। নিজের সাথে নিজে কথা বলছেন। এতে মানসিক চাপ কমে।
আত্মশুদ্ধির সুযোগ : মানুষ মাত্রই ভুল হয়। কেউ এমন নেই যে বলতে পারবেন তার জীবনে কখনও ভুল করেননি। কিছু কিছু কাজ আমরা একেবারে নিজেদের অজান্তেই করে ফেলি। আবার কিছু কাজ করার পর মনে হয় এটা ঠিক হয়নি। আপনি যদি নিয়মিত নিজের কর্মকাণ্ড ডায়েরিতে লিখতে শুরু করেন তাহলেই বুঝতে পারবেন কোন কাজটা আপনার ঠিক হল আর কোন কাজটা করা হল ভুল।
স্মরণশক্তি বাড়ে : এখন বিজ্ঞান প্রযুক্তির যুগে আমরা অনেক সময় পরিবারের সদস্যদের নাম্বার পর্যন্ত মনে রাখতে পারি না। সেই জায়গায় নিয়মিত ডায়েরি লিখলে আপনার প্রয়োজনীয় এবং জরুরি বিষয়গুলিও সেখানে লিপিবদ্ধ হবে। দিনলিপি লেখা মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়, স্মৃতিশক্তিকে আরও তীক্ষ্ণ করতে সাহায্য করে।
নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ : প্রতিযোগিতার এই বিশ্বে কেউ পড়াশোনার জন্য, কেউ চাকরির জন্য, কেউ ব্যবসার জন্য আবার কেউ পরিবারকে ভালো রাখার উদ্দেশ্যে ব্যস্ত থাকেন। যার কারণে অনেকেই নিজেকে বড্ড অগোছালো করে ফেলেন। ডায়েরিতে যদি প্রতিদিন রাতে শোওয়ার আগে ও পরের দিন কী কী কাজ করতে চান কিংবা সেই দিন কী কী করলেন তা লিপিবদ্ধ করেন তবে নিজেকে সুসংগঠিত করার একটা সুযোগ থেকে যায়।






