ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান বিশিষ্টজনদের

0
301

ডেঙ্গু এখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি আর কেবল শহুরে রোগ নয়। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুধুমাত্র নিয়মিত ব্রিফিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।

 

রোববার (৬ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘পরিবেশ ও সামাজিক অভিঘাতের প্রেক্ষিতে ডেঙ্গুর প্রসার’-শীর্ষক আলোচনা সভায় এই আহ্বান জানান বক্তারা।

সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপা’র সহ-সভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবিব।

অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর) এর অন্যতম উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম আবু সাঈদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী এবং বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার।

স্থপতি ইকবাল হাবিব তার মূল প্রবন্ধে বলেন, ডেঙ্গু জ্বর একটি মশাবাহিত ভাইরাস সংক্রমণ। এটি সাধারণত বিশ্বের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে দেখা যায়। এডিস প্রজাতির স্ত্রী মশার কামড়ে এটি হয়ে থাকে। এটি তখনই ঘটে, যখন মশা একটি সংক্রমিত ব্যক্তিকে কামড় দেয় এবং তারপর ভাইরাস বহন করার সময় একটি অসংক্রমিত ব্যক্তিকে কামড় দেয়। পৃথিবীতে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ প্রজাতির মশার ২৫% হচ্ছে এডিস। বাংলাদেশে প্রাপ্ত ১২৬ প্রজাতির মশার মধ্যে ২৬টি এডিস। যার দুটি প্রজাতি-এডিস ইজিপ্টি ও এডিস অ্যালবোপিকটাস ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক।

ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ডেঙ্গু এখন আর শহুরে রোগ নয়। বরং এটি এখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মিত ব্রিফিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে, প্রতিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডেঙ্গু পরীক্ষা কেন্দ্র চালু করতে হবে। যারা পজিটিভ হবেন তাদেরকে বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি কেন্দ্রকে মশা প্রতিরোধক নেট ব্যবহারের আয়তায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু সম্পূর্ণ মৃত্যু প্রতিরোধযোগ্য রোগ। সুতরাং দেশে এর জন্য উন্নত গবেষণা করে টিকা আবিষ্কার ও তা প্রদান জরুরি। আমরা এর আহ্বান জানাই। বছরব্যাপী সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ প্রদানেরও আহ্বান জানাচ্ছি।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, ষাটের দশকে দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূল হয়েছিল। কিন্তু এখন আবার সেই ম্যালেরিয়ার প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এটা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। দেশে সরকারসহ সকল স্তরে সচেতনতা কর্মকাণ্ড পরিচালনা, নিয়মিত তদারকি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণই ডেঙ্গু রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাপা’র কোষাধ্যক্ষ জাকির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির সুমন, ফরিদুল ইসলাম ফরিদ, নূর আলম শেখ এবং বাপা জাতীয় কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন, হাজী শেখ আনছার আলী, ফাহমিদা নাজনিন তিতলি, আব্দুস সামাদ প্রধান, শাকিল কবিরসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা এবং বিভিন্ন পরিবেশবাদী ও সামাজিক আন্দোলনের প্রতিনিধিরা।