গরমে ঠাণ্ডা পানি পান কি ক্ষতিকর?

0
92
পানি পান
ছবি: সংগৃহীত

চৈত্রের শেষের দিকে কয়েকদিনের তীব্র গরমে অতিষ্ট নগরবাসী। একে তাপমাত্রা সহন ক্ষমতার বাইরে, তার সঙ্গে রয়েছে বাতাসের অত্যধিক আর্দ্রতা। এ দুইয়ের সাঁড়াশি আক্রমণে সাধারণ মানুষের অবস্থা খুবই নাজেহাল।
এমন তীব্র দাবদাহে একটু প্রশান্তির খোঁজে সকলেই ঠাণ্ডা পানি গলায় ঢালছেন। এ ঠাণ্ডা পানি পান করা মাত্রই সারা শরীরে বয়ে যায় একমুঠো শীতল আমেজ। কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভুলে থাকা যায় তাপদাহ।

কিন্তু প্রশ্ন হলো তীব্র এ গরমে হঠাৎ ঠাণ্ডা পানি পান করা শরীরের জন্য কতটুকু উপকারী? আসুন জেনে নেই সেসব তথ্য-

ঠাণ্ডা পানি পান করলেই কী শরীর খারাপ নিশ্চিত?

এ প্রশ্নের উত্তরে বিশেষজ্ঞরা জানান, ঠাণ্ডা পানি বিষ নয়। তাই এ পানি পান করলেই যে শরীর খারাপ করবে এমন ধারণাও ভুল। অনেকেই মনে করেন, ঠাণ্ডা পানি পানে শরীরে ফ্যাট বেড়ে যায়। এ ধারণারও কোনো ভিত্তি নেই। তবে গরমে হঠাৎ করে ঠাণ্ডা পানি পান করার আগে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। নয়তো শরীরে নানা সমস্যা বাসা বাঁধতে পারে। বিশেষ করে বাইরে থেকে এসেই ঠাণ্ডা পানিতে চুমুক দেয়া থেকে বিরত থাকুন।

কী কী সমস্যা হয়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, তীব্র দাবদাহে ঠাণ্ডা পানি পান করলে বেশ কয়েকটি সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন-

# তীব্র গরমের এ পরিস্থিতিতে ঠাণ্ডা পানি পান করলে শরীরের তাপমাত্রা হুট করেই কমে যায়। ফলে এটি শরীরে একটি বৈপরিত্য তৈরি করে। এর ফলে ঠাণ্ডা লাগার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

# গরমে ঠাণ্ডা পানি পান করলে ফুসফুসে মিউকাস বা কফ জমার আশঙ্কা তৈরি হয়।

# সর্দি লাগার আশঙ্কা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

# দাঁতে ব্যথা হতে পারে।

তাই ভুল করেও ঠাণ্ডা পানি বেশি পরিমাণে পান করবেন না। বিশেষ করে রোদ থেকে এসে সরাসরি বরফ ঠাণ্ডা পানি পানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।

ঠাণ্ডা পানি পান একদম বন্ধ?​

ফ্রিজ থেকে বোতল বের করেই গলায় ঠাণ্ডা পানি ঢালার অভ্যাস অনেকেরই আছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, এ অভ্যাস কারো থাকলে তা ছাড়তে হবে। তবে, ঠাণ্ডা পানি না পান করতে তারা বলছেন না। ঠাণ্ডা পানি পান করার ক্ষেত্রে ঠাণ্ডা পানির সঙ্গে স্বাভাবিক তাপমাত্রার কিছুটা পানি মিশিয়ে তারপর পান করুন। এর ফলে পানির তাপমাত্রা শরীরের সহনযোগ্য পর্যায়ে চলে আসবে। এতে করে শরীরের অম্লতা বা ক্ষারতা (পিএইচ) ব্যালেন্সও ঠিক থাকবে।

ঈষদুষ্ণ পানি পান করুন:

অসহনীয় গরম পড়েছে বলে অনেকেই কুসুম পানি খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। এ ভুল করতে যাবেন না। সকালে উষ্ণ পানি পান করলে শরীরের ফ্যাট কমে, হজম প্রক্রিয়া ঠিকমতো কাজ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তাও ভালো হয়ে যায়। তাই রোজ সকালে গরম পানি পান করতে মোটেও ভুল করবেন না।

দিনে ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পান করুন:

বিশেষজ্ঞদের মতে, তীব্র এ গরমে দিনে ৩ থেকে ৪ লিটার পানি অবশ্যই পান করতে হবে। পাশাপাশি ডাবের পানি, ফলের জুস, ঘোল, লেবুর শরবত খেতে পারেন। তবে, এসব পানীয়ে একদমই চিনি মেশানো যাবে না। বাইরে থেকে শরবত, ঘোল, ফলের জুস কিনে না খেয়ে বাড়িতেই বানিয়ে খেলে উপকার বেশি পাওয়া যাবে।