দেশের ১৮ শতাংশ মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত!

0
173

দীর্ঘদিনের বিষণ্নতা থেকে যখন মুক্তি মেলে না, তখন তা মানসিক রোগে পরিণত হয়। গবেষণা বলছে, জীবনে হতাশা, নিঃসঙ্গতা থেকে দেশে বাড়ছে মানসিক রোগীর সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতাও।

মন খারাপ, ভালো লাগে না, মুড অফ কিংবা শরীর খারাপ–এমন সমস্যা যেন এখন নিত্যসঙ্গী। কখনো মনে হয় হাত-পা জ্বালাপোড়া করছে, আবার কখনো মনে হয় বুকে ব্যথা করছে। মনে হয় এবার মরেই যাব। মানুষের এমন মনে হওয়াকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বিষণ্নতা বলা হয়।

দীর্ঘমেয়াদি এ বিষণ্নতাই ডেকে আনে মানসিক সমস্যা। ব্যস্তময় জীবন আর প্রতিযোগিতার চাপে নিঃসঙ্গতা যখন আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে ধরে তখনই মানসিক রোগের শিকার হন মানুষ। এ মানসিক রোগই এক সময় হয়ে ওঠে নানা শারীরিক সমস্যার কারণ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ নেই। তবে দুশ্চিন্তা, অনিদ্রা, বিষণ্নতা, শুচিবায়ুর মতো বিষয় সাধারণ মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের গবেষণা অনুযায়ী, দেশের ১৮ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো মানসিক রোগে আক্রান্ত। পেশাগত হতাশা থেকে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতাও।

চিকিৎসকরা বলছেন, বিষণ্নতা দু’সপ্তাহ স্থায়ী হলেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। এ অবস্থায় কাউন্সিলিং খুব জরুরি। কিন্তু মানসিক রোগের খরচ অনেক বেশি হওয়ায় এ সেবা নিতে পারেন না বেশিরভাগ রোগী।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক (সাইকিয়াট্রি) ডা. তাইয়েব ইবনে জাহাঙ্গীর বলেন, মানসিক রোগ বা বিষণ্নতা রোগে যারা ভোগেন তাদের মধ্যে হঠাৎ করে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যেমন দীর্ঘ সময় মন খারাপ থাকা, ঘুম কমে যাওয়া, কর্মস্পৃহা কমে যাওয়া, খাবারে অরুচি, ভালো কিছু শুনলেও ভালো না লাগা ইত্যাদি।

ডা. তাইয়েব আরও বলেন, এসব সমস্যার চিকিৎসা না করা হলে তা আরও বাড়তে শুরু করে। যা আত্মহত্যা করার ঝুঁকি তৈরি করে। তাই সাইকিয়াট্রি বা সাইকোলজিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেলে ও প্রয়োজনীয় কাউন্সিলিং নিলে পুরোপুরি ভালো হওয়া সম্ভব।

এদিকে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় দেশে মনোরোগ চিকিৎসকের সংখ্যা হাতেগোনা। এছাড়া হাতেগোনা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের চার্জ অনেকটা বেশি যা রোগীর জন্য বহন করা বেশ কষ্টকর।

ডা. লেলিন চৌধুরী আরও বলেন, সারাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন করতে হলে সরকারি পদক্ষেপ জরুরি। যদি স্কুল, কলেজেই কাউন্সিলিংয়ের বিষয়টি থাকে তবে তা অনেকটা সমাধানের পথে এগোবে।