শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় রসুন খাওয়ার অভ্যাস করেন অনেকে। রসুনের ওষুধি গুণের কারণে কেউ কেউ ভাতের সাথে এক কোয়া রসুন খাওয়ার অভ্যাস করেন। অনেকে আবার এক কোয়া রসুন খালি পেটে খাওয়ারও অভ্যাস করেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খালি পেটে রসুন খাওয়ার রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, রসুনে থিয়ামিন (ভিটামিন বি১), রিবোফ্লাবিন (ভিটামিন বি২), নায়াসিন (ভিটামিন বি৩), প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি৫), ভিটামিন বি৬, ফোলেট (ভিটামিন বি৯), এলিসিন ও সেলেনিয়াম আছে।
এছাড়া রসুনে রয়েছে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, পটাসিয়াম, জিঙ্ক, কপার, থায়ামিন এবং রাইবোফ্লাভিনের মতো পুষ্টি উপাদান। এ কারণে রসুনকে সুপার ফুড হিসেবে গণ্য করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রসুনের অনেক গুণ। শরীরের নানা জটিলতা কাটাতে রসুন দারুণ কাজ করে। এ রসুন চোখ ভালো রাখা থেকে শুরু করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও কার্যকরী।
খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ শতকে চীন ও ভারতে রক্ত পাতলা রাখার জন্য রসুন ব্যবহার হতো। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক হিপোক্রেটিস রসুনকে ব্যবহার করেছিলেন সারভাইকাল ক্যানসারের চিকিৎসায়।
গবেষণা বলছে, নিয়মিত রসুন খেলে হার্ট অনেক বেশি সুস্থ থাকে। নানা হৃদরোগ জটিলতা প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি লাইভের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, খালি পেটে অথবা নিয়মিত রসুন খাওয়ার অভ্যাসে রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা। যেমন:
১. শরীরের জন্য খারাপ কোলেস্টেরল প্রায় ১০–১৫ শতাংশ কমে যায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
২. বিপাকীয় ক্রিয়া ও পরিবেশ দূষণের ফলে যে ফ্রি র্যাডিক্যালস তৈরি হয়, রসুনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সেই ক্ষতি খুব ভালোভাবে ঠেকাতে পারে।
৩. অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রাও বেশি থাকে রসুনে। তাই নিয়মিত রসুন খাওয়ার অভ্যাস থাকলে অ্যালঝাইমার ও ডিমেনসিয়ার প্রকোপ কমে।
৪. সংক্রমণজনিত অসুখ-বিসুখ কম হয়। লিভার এবং মূত্রাশয়ের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
৫. ইস্ট্রোজেন লেভেল বাড়িয়ে মেয়েদের হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
৬. শরীরের জন্য ক্ষতিকর লেড টক্সিসিটি কমায়। শরীরের এলার্জির সমস্যা দূর করে। শরীরকে ডিটক্স করতে কাজ করে।
৭। মানসিক চাপ ও নার্ভাস সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করতে কাজ করে রসুন। পরিবর্তিত আবহাওয়ায় ঠান্ডা, কাশি, জ্বর হলে তা সমাধানেও কাজে আসে রসুন।
৮। স্থায়ী ব্রণ সমস্যার সমাধান পেতে নিয়মিত রসুন খেতে পারেন।
৯। শারীরিক যে কোনো দুবর্লতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকরী রসুন।
১০। রসুন হজম শক্তি ও ক্ষুধা বাড়ায়। পাকস্থলীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধান করতে পারে।
রসুনের ঝাঁঝালো গন্ধের উপাদান অ্যালিসিন। শরীরে বেশি ঢুকলে বিষক্রিয়া এবং সঠিক পরিমাপে থাকলে ওষুধের মতো কাজ করে। তাই নিয়মিত সবোর্চ্চ ৪ কোয়ার বেশি রসুন খেতে যাবেন না।