উচ্চ কোলেস্টেরল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অগোচরে থেকে যায়, যতক্ষণ না এটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ এতে সাধারণত স্পষ্ট লক্ষণ থাকে না। তবে কখনো কখনো কিছু লক্ষণ নির্দেশ করতে পারে যে আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি এবং আরও পরীক্ষা-নীরিক্ষা প্রয়োজন। কয়েকটি সতর্কতা লক্ষণ রয়েছে যা উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা নির্দেশ করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
শ্বাসকষ্ট
শ্বাসকষ্ট ইঙ্গিত করতে পারে যে উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে প্লাক তৈরি হয়েছে। ফলস্বরূপ ধমনী সংকীর্ণ হওয়ার কারণে হৃৎপিণ্ড যথেষ্ট অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত গ্রহণ করছে না। এথেরোস্ক্লেরোসিস নামে পরিচিত এই অবস্থাটি আরও গুরুতর কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি ব্যায়াম না করে যেকেনো সময় শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন বা অপেক্ষাকৃত সহজ শারীরিক ব্যায়াম বা বিশ্রামে থাকার সময়ও শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন তবে এটি একটি সতর্কতা চিহ্ন হতে পারে যে আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি।
বমি বমি ভাব
বমি বমি ভাব উচ্চ কোলেস্টেরল সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। যখন ধমনীতে কোলেস্টেরল তৈরি হয়, তখন হৃৎপিণ্ডে রক্তের প্রবাহ প্রভাবিত হয় তাই বমি বমি ভাব বা অস্বস্তি হয়। এই উপসর্গটি প্রায়ই হার্ট অ্যাটাক বা এনজিনার মতো গুরুতর সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে, যেখানে বুকে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি বমি বমি ভাব হতে পারে। ক্রমাগত বমি বমি ভাব অনুভব করলে এবং অন্যান্য উপসর্গের সম্মুখীন হলে ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরি।
ঠান্ডা পা এবং পায়ের অসাড়তা উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রার কারণে দুর্বল সঞ্চালনের একটি ইঙ্গিত হতে পারে, যা পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ বা PAD এর দিকে নিয়ে যায়। এই অবস্থায়, প্ল্যাক তৈরি হয়ে পায়ের ধমনীগুলোকে সংকুচিত করে, রক্ত প্রবাহ হ্রাস করে এবং হাতের অংশে ঠান্ডা লাগা এবং অসাড়তার মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। আপনি যদি এই ধরনের লক্ষণ মাঝে মাঝেই অনুভব করেন, বিশেষ করে যখন কোনো শারীরিক ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করেন, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পায়ের ঘা নিরাময়ে অসুবিধা
পায়ের ঘা বা আলসার নিরাময়ে ব্যর্থতা উচ্চ কোলেস্টেরল সম্পর্কিত অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর একটি। এই আলসার বেশিরভাগ সময় প্লেক তৈরি করে। সরু ধমনীর কারণে দুর্বল সঞ্চালনের ফলে এটি হয়। যদি আপনার পায়ে ক্রমাগত ঘা বা আলসার থাকে যা চিকিৎসায়ও ঠিকভাবে সারে না, তাহলে আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং সামগ্রিক রক্তনালী স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করা জরুরি।
আপনার যদি উচ্চ কোলেস্টেরল থাকে তবে ধীরে ধীরে রক্তনালীতে ফ্যাটি জমা হতে পারে। পরবর্তীতে তা ধমনীতে পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহকে কঠিন করে তোলে। মাঝে মাঝে ব্লকেজ ভেঙে যায় এবং জমাট বাঁধে যা হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। তাই আগে থেকে সতর্ক থাকলে এই সমস্যা নির্ণয় করা সহজ হতে পারে এবং চিকিৎসা নিলে উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতে পারে। কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়মিত ফলো-আপ এবং রক্ত পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।