স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিনসহ বিগত সরকারের আমলে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যের শিকার চিকিৎসক, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও নার্স কর্মকর্তারারা।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। এ সময় ড্যাবের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ৮ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
সুপারিশগুলো হলো-
১. ডা. রোবেদ আমীন (মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর), ডা. ফজলে রাব্বি (পরিচালক, প্রশাসন) সহ বিগত সরকারের সুবিধাপ্রাপ্ত ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরোধিতাকারী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে যাদের নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে তাদের নিয়োগ আদেশ বাতিল করা।
২. আহত ছাত্র-জনতাকে যারা চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করেছে (বিএসএমএমইউ থেকে শুরু করে সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান) তাদের তালিকা প্রণয়ন করে বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা। শান্তি সমাবেশে যোগদানকারী ও ফ্যাসিবাদের দোসর সব চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তার পদ থেকে অব্যাহতি এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করে শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৩. অতি দ্রুত বৈষম্যের শিকার সকল চিকিৎসক ও কর্মচারীদেরকে ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি দিয়ে বৈষম্য দূর করা। বর্তমানে পদোন্নতিযোগ্য প্রত্যেককেই দ্রুততার সাথে পদোন্নতির ব্যবস্থা করা। কেবল তাহলেই বঞ্চিত, দক্ষ, যোগ্য কর্মকর্তাদের পদায়ন করে স্বাস্থ্য প্রশাসন ঢেলে সাজানো সম্ভব হবে, যা অতি জরুরি।
৪. মেডিকেল কলেজসহ প্রতিটি হাসপাতাল দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এ সকল প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিমুক্ত করতে যোগ্য ও বৈষম্যের শিকার শিক্ষক ও চিকিৎসকদের যথোপযুক্ত পদে পদায়িত করা। বিগত দীর্ঘ ১৬ বছর সময়ে স্বাস্থ্য খাতে যত দুর্নীতি হয়েছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা।
৫. মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইনস্টিটিউটসমূহ, নার্সিং কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অতি দ্রুত স্বৈরাচারের দোসরদের সরিয়ে বৈষম্যের শিকার চিকিৎসকদের পদায়ন করা।
৬. প্রতিবাদকারী যেসব চিকিৎসকদের হয়রানিমূলক বদলি করা হয়েছে সেই বদলি আদেশ অবিলম্বে বাতিল করা। ভবিষ্যতে বৈষম্যের শিকার চিকিৎসকদের কোনোভাবেই হয়রানিমূলক বদলি না করা।
৭. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশের বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিষয়ভিত্তিক প্রয়োজনীয় সংস্কার ও চিকিৎসাসেবার গুণগতমান উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কাঠামো শক্তিশালীকরণের জন্য গঠিত বিশেষজ্ঞ প্যানেল কমিটি অতি দ্রুত বাতিল করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশকারী চিকিৎসক সমাজের প্রতিনিধিত্ব রেখে কমিটি পুনঃগঠন করা।
৮. স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এবং সেবক-সেবিকাসহ যাদের হয়রানি ও নির্যাতনমূলক বদলি এবং পদোন্নতি বঞ্চিত করে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। অবিলম্বে তাদের সিনিয়রিটিসহ বিভিন্ন পদে পদায়ন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিগত সরকারের ১৬ বছরে তারা নানাভাবে বঞ্চিত ও আন্দোলন চলাকালে হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করেন।