পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে কাঁটাচামচ এবং পূর্ব এশিয়ায় চপস্টিক দিয়ে খাবার গ্রহণ করার রীতি রয়েছে। বাকি বিশ্বে হাত দিয়ে খাবার গ্রহণ করা সংস্কৃতির অংশ। পাশ্চাত্যের রীতি অনুসরণ করে এখন অনেকে নিজেকে আধুনিক ও সভ্য প্রমাণের চেষ্টায় আবহমান কালের সংস্কৃতি পরিত্যাগ করে কাঁটাচামচ দিয়ে খাবার গ্রহণ করেন। হাত দিয়ে খাবার গ্রহণকে অসভ্যতা এবং অপরিষ্কার জীবনযাপনের অংশ বলে নাক সিঁটকাতেও দেখা যায় কাউকে কাউকে।
তারাসহ অনেকেই হয়তো জানেন না হাত পরিষ্কার করে খাবার গ্রহণ করা বরং স্বাস্থ্যকর একটি অভ্যাস। হাত দিয়ে খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে গবেষণায় প্রমাণিত কিছু উপকার জেনে নিই চলুন।
১. হাত দিয়ে খাবার গ্রহণ হজমের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। খাবার মাখানোর সময় আঙ্গুলের ত্বকে অবস্থিত স্নায়ু খাবারের ধরন মস্তিষ্কে জানিয়ে দেয় এবং সেই অনুযায়ী পরিপাকতন্ত্র হজমের জন্য প্রয়োজনীয় পরিপাক রস নিঃসরণের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। কাঁটাচামচ বা চপস্টিক দিয়ে খাবার গ্রহণ করলে হজম সহায়ক এই ধাপটি বাদ থেকে যায়।
২. হাতের ত্বকে হজম সহায়ক এক ধরনের স্বাস্থ্যকর জীবাণু থাকে, যা হাত পরিষ্কার করার পরেও থেকে যায়। যারা বদহজমে (Irritable bowel syndrome) ভুগে থাকেন তাদেরকে হাত দিয়ে খাবার গ্রহণ হজমে সহায়তা করে থাকে।
৩. গবেষণায় দেখা গেছে, দ্রুত খাবার গ্রহণ টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। কাঁটাচামচ বা স্টিক দিয়ে হাতের তুলনায় তাড়াতাড়ি খাবার গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তাই হাত দিয়ে খাবার গ্রহণ ডায়াবেটিস-২ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. হাত দিয়ে খাবার গ্রহণ স্নায়ুর মাধ্যমে পরিমিত খাবার গ্রহণ করার জন্য মস্তিস্কের মাধ্যমে পাকস্থলীকে নির্দেশনা দিয়ে থাকে, যা স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করে।
সর্বোপরি হাত দিয়ে খাবার গ্রহণ করলে খাবারের নানা পদ সংমিশ্রণ করে স্বাদের বৈচিত্র্য এবং পরিতৃপ্তি লাভ করা যায়। তবে মনে রাখবেন, খাওয়ার আগে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে অবশ্যই হাত পরিষ্কার করতে হবে।