শিশুর কাশি হলেই কি সিরাপ দেয়া ভালো?

0
196

ছোট্ট বেলায় শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই নিয়মিত কিছু রোগ সোনামনির পিছু ছাড়ে না। বাবা-মাও চান শিশুর যেন কোনো কষ্ট না হয়। তাই জ্বর, ঠান্ডা কিংবা কাশি হলেই সাথে সাথে ওষুধ দিয়ে দেন। কখনও কখনও প্রেসক্রিপশন ছাড়াই কাশির ওষুধ দেয়া হয়। কিন্তু এই কাশির ওষুধ শিশুর জন্য ভয়ের কারণ, বলছে গবেষণাও।

গবেষণায় দেখা গেছে, কাশির সিরাপ প্রাপ্তবয়স্কদের জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে না দিলেও তৈরি করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে খিঁচুনি, ঝিমুনি, অস্বাভাবিক হৃদ্‌স্পন্দন, কিডনি ও লিভারের ক্ষতি।

শিশুদের ক্ষেত্রে তা আরও প্রবল হয়ে ওঠে। আমেরিকার শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।

ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আফ্রিকার গাম্বিয়াতে আমদানি করা কাশির ওষুধে ডাইথিলিন গ্লাইকল বা ইথিলিন গ্লাইকলের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে, যা শিশুদের শরীরে কিডনিতে সংক্রমণের জন্য দায়ী।

এর আগে ‘হু’-র প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস দাবি করেছিলেন, ‘‘কিডনির গুরুতর সমস্যা ও শিশুর মৃত্যুর সঙ্গে যোগ রয়েছে ৪টি কাশির সিরাপ। যেগুলো ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আমেরিকায়।

এ ৪টি কাশির সিরাপ হলো প্রোমেথাজিন ওরাল সলিউশন, কফেক্সমালিন বেবি কাফ সিরাপ, মেকফ বেবি কাফ সিরাপ এবং মাগরিপ এন কোল্ড সিরাপ।

গবেষণাপত্র থেকে জানা যায়, কাশির শিরাপের কারণে আমেরিকায় ১২৩ শিশু এবং আফ্রিকায় ৬৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আমেরিকায় আরও দেড় হাজার শিশু ভুগছে বিভিন্ন স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায়।

তাই আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন দুই বছরের নিচের শিশুদের জন্য প্রেসক্রিপশন ছাড়া কাশির সিরাপ বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে। কানাডায় এক্ষেত্রে শিশুদের বয়স আরও বাড়িয়ে ৬ বছর করা হয়েছে।

মৃত্যুর কারণ হিসেবে গবেষকরা খুঁজে পেয়েছে কাশির সিরাপে হাইড্রোকার্বন, গুয়াইফেনেসিন, সিউডোএফিড্রিন, ট্রাইপোলিডিন, ডেক্সট্রো মেথরফেন, অ্যান্টিহিস্টামিন, ডাইথিলিন গ্লাইকল বা ইথিলিন গ্লাইকলের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানগুলো।

তাই যখনই কাশির সিরাপ কিনতে যাবেন তখন ওষুধের মোড়কে অবশ্যই চেক করুন সিরাপ তৈরির উপকরণে এসব উপাদান রয়েছে কিনা। তবে সবচেয়ে ভালো হয় সর্দিকাশিতে সিরাপে পরিবর্তে ভেষজ উপাদান বেছে নেয়া।

এই পূর্ণবয়স্ক বা শিশুদের সর্দি কাশিতে বেছে নিতে পারেন মধু, গরম দুধ, গরম মশলা চা, তুলসি ও বাসক পাতার রস ইত্যাদি।

সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান