গরমের দিনে তাপের প্রভাবে রান্না করা খাবার ও কাঁচা খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এতে অর্থেরও অপচয় কম হয় না। আমিষ, শর্করা, ম্নেহপদার্থ-এ তিন ধরনের খাবারে পানির পরিমাণ বেশি থাকে বলে খাদ্য অণুজীবের সাহায্যে আক্রান্ত হয়ে খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়। এ কারণে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে খাবার নষ্ট হওয়া রোধ করা সম্ভব।
কাঁচা খাবার
♦ বাজার থেকে আনার পর মাছ-মাংস বেশিক্ষণ ফেলে রাখা যাবে না। যত দ্রুত সম্ভব রান্না করে ফেলতে হবে অথবা ডিপ ফ্রিজে উঠিয়ে রাখতে হবে।
♦ মাছ বা মাংস মেরিনেট করে রাখলে ঢেকে রাখতে হবে অথবা ফ্রিজে উঠিয়ে রাখতে হবে।
♦ শাক-সবজি ফল বাজার থেকে আনার পর পলিব্যাগে না রেখে খবরের কাগজ মুড়ে রাখলে ভালো হয়। এভাবে বাইরেও সবজি ভালো থাকে। তেমনি পাকাকলাকে মুড়ে রাখলেও ভালো থাকবে।
♦ সবজি কাটার পরপরই রান্না করে ফেলতে হবে।
♦ ফল কাটার পরপরই খেয়ে ফেলতে হবে। কাটা ফল একদিনের বেশি ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়। এতে পুষ্টিগুণেরও ঘাটতি হয়।
♦ ফ্রিজে সংরক্ষণের সময় রান্না করা খাবার ও কাঁচা খাবার এক সঙ্গে রাখা ঠিক নয়। এতে রান্না করা খাবারে জীবাণুর বিস্তার হতে পরে।
রান্না করা খাবার
♦ রান্না করার পর যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব খাবার খেয়ে ফেলা উচিত।
♦ চুলা থেকে নামানোর পর একটি প্লেট বা ট্রেতে পানি দিয়ে রান্না করা পাত্রে রাখতে হবে। এতে খাবার বেশিক্ষণ ভালো থাকবে এবং পিঁপড়া ও তেলাপোকার উপদ্রব হবে না।
♦ রান্না শেষ হওয়ার পর হাঁড়ি বেশিক্ষণ চুলায় রাখা যাবে না। এতে তাপে খাবার নষ্ট হয়ে যাবে।
♦ রান্না করা খাবার ঠান্ডা করে রেফ্রিজারেটরে ঢাকনা দিয়ে রাখতে হবে।
♦ রান্না করা খাবার নাড়াচাড়া করার পর গরম করে ঠান্ডা করে ফ্রিজে রাখতে হবে। কারণ এই খাবার গন্ধ হবে না, তবে এতে জীবাণুর বিস্তার ঘটে থাকে।
♦ অনেকে ডাল-তরকারি ইত্যাদি চুলা থেকে নামানোর পর ডেকচি করে ঝাঁকুনি দিয়ে নামিয়ে রাখেন। এতে খাবারটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য খাবার তৈরির পর ধীরে ধীরে নামাতে হবে। যাতে কোনো ঝাঁকুনি না লাগে।
♦ রান্নার পর খাবার নামিয়ে রেখে খোলা রাখতে হবে। তারপর ধোঁয়া উঠা বন্ধ হলে ভালোভাবে ঢেকে রাখতে হবে।
♦যদি একসঙ্গে বেশি খাবার রান্না করা হয়, তাহলে প্রতিবেলা হিসাব করে আলাদা পাত্রে ফ্রিজে রাখতে হবে। যাতে নির্দিষ্ট বেলায় সেই খাবারটি নামানোর পর শেষ হয়ে যায়। তা নাহলে পুরো খাবার বারে বারে গরম করলে এর স্বাদ ও পুষ্টি দুটিই নষ্ট হবে।
♦ বেচে যাওয়া খাবার পুনরায় ব্যবহার করতে হয়, তাহলে ফ্রিজ থেকে বের করার পর ৭৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় এমনভাবে গরম করতে হবে, যাতে খাবারের প্রতিটি অংশে তাপমাত্রা ভালোভাবে প্রতিটি অংশে পৌঁছায়।
♦ রান্নায় কম পানি ব্যবহার করতে হবে।
♦ ভাত রান্নার পর যদি দীর্ঘসময় পর খেতে হয়, তাহলে রান্নার পর অ্যালুমিনিয়ামের ছিদ্রযুক্ত পাত্রে ভাত ঢেলে রাখতে হবে। তাহলে ভাত নষ্ট হবে না।
♦ রান্না করা খাবারের তাপমাত্রা যাতে ঠিক থাকে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
♦ সদ্য রান্না করা এবং বাসি খাবার এক সঙ্গে রাখা ঠিক নয়।
♦ তরল দুধ দুই দিনের বেশি ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়।
♦ রান্না করা খাবার বেশি নাড়াচাড়া করা যাবে না।
যে কোনো রান্না করা খাবার দুই-তিন দিনের বেশি ফ্রিজে রাখালে সেই খাবার নষ্ট হয়ে যাবে। গরমের সময়ই এ সমস্যা হয়ে থাকে।