লিভার মানব শরীরের হজম, পুষ্টি সংশ্লেষণ এবং বিপাকীয় ফাংশনে প্রধান ভূমিকা পালন করে। পেটের উপরের ডান চতুর্ভুজ অংশে অবস্থিত, লিভার আপনার শরীরের বাকি অংশে ফিউজ করার আগে পরিপাকতন্ত্র থেকে আসা রক্তকে ফিল্টার করে। এর আরেকটি কাজ হলো রাসায়নিক পদার্থকে ডিটক্সিফাই করা এবং ওষুধকে বিপাক করা।
তবে আমাদের ফ্যাট সমৃদ্ধ ডায়েট এবং অলস জীবনযাত্রার কারণেই কিন্তু এই অঙ্গের ক্ষতি হচ্ছে। এমনকি লিভারে জমছে ফ্যাট। আর এই সমস্যার নামই হলো ফ্যাটি লিভার।
লিভারের কোষে চর্বি জমলে তাকে ফ্যাটি লিভার বলে। ঠিক সময়ে চিহ্নিত করা না গেলে এটি গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার কারণ হতে পারে। ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খাবারের তালিকা এবং জীবনযাপনের ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে। সেইসঙ্গে কিছু ঘরোয়া প্রতিকারও আপনাকে এই কাজে সাহায্য করতে পারে। চলুন জেনে নিই ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায়-
ফ্যাটি লিভার ঠিক করার জন্য আমাদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করা, চিনিমুক্ত এবং চর্বিমুক্ত খাবার খেতে হবে। স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখতে হবে, এটি আমাদের লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। কেন না এটি ফ্যাটি লিভারের রোগকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
ফ্যাটি লিভারের জন্য কোন খাবার ভালো
ফ্যাটি লিভার রোগ নিয়ন্ত্রণে ডায়েট একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ কারণে আপনি প্রতিদিনের রুটিনে ফল, শাকসবজি, দানা শস্য এবং চর্বিহীন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেছে নিন। এটি লিভারের কার্যকারিতা বাড়াতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার, যেমন বেরি, গ্রিন টি এবং বাদাম, লিভারে প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
আদা, পুদিনা এবং লেমনগ্রাসের পানীয়
ফ্যাটি লিভারের ঘরোয়া প্রতিকার হলো পুদিনা, লেমনগ্রাস এবং আদা থেকে তৈরির সংমিশ্রণ। এই উপাদানগুলোতে লিভার-প্রতিরক্ষামূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এগুলো হজমে সাহায্য করে। এগুলো ফ্যাটি লিভার রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বেশ কার্যকরী।
প্রতিদিন হাঁটুন
প্রতিদিন রুটিন করে হাঁটাহাঁটি করুন। এটি আপনার শরীরকে চাঙ্গা রাখে। এছাড়া শরীরচর্চা ফ্যাটি লিভারের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। তাই সকালে নিয়ম করে এক ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি শুরু করুন। এতে শরীর ভালো থাকবে। ফ্যাটি লিভার রোগও সারবে।
ব্যায়াম
ফ্যাটি লিভার কমাতে প্রতিদিন ব্যায়াম করা জরুরি। বাড়িতে প্রতিদিন সকালে ১৫-২০ মিনিট নিয়ম করে ব্যায়াম করুন। এতে লিভারের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফ্যাটি লিভারও সেরে যাবে কিছুদিনেই।
চিনি না খাওয়া
ফ্যাটি লিভারের অর্থ হলো লিভারে ফ্যাট জমতে থাকা। চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার লিভারের জন্য বিষ বললেও ভুল বলা হয় না। তাই চিনি খাওয়া একেবারেই কমিয়ে দিন। কোনওরকম মিষ্টিজাতীয় খাবারও খাবেন না।
ভাজাপোড়া না খাওয়া
ফ্যাটি লিভারের রোগ সারতে ভাজাভুজি খাবার একদম খাওয়া যাবে না। এই ধরনের খাবার শরীরে ফ্যাট জমতে সাহায্য করে। এর ফলে লিভারের অবস্থা আরও খারাপ হবে।