ব্রাজিলের মাটিতে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে লিওনেল মেসি, গঞ্জালো হিগুয়েনদের সঙ্গে একাদশে ছিলেন এজেকুয়েল লাভেজ্জি। সে সময়ের অন্যতম সেরা এই ফরোয়ার্ড ফুটবলের পাঠ চুকিয়ে এখন বাস করেন উরুগুয়েতে। সেখানেই পেটে ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন লাভেজ্জি। পরে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
আর্জেন্টিনার সাবেক ফরোয়ার্ড লাভেজ্জিকে ছুরিকাঘাতের ঘটনাটি গতকাল উরুগুয়ের মালদোনাদোয় ঘটেছে বলে জানিয়েছে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস ও ক্লারিন। ২০১৯ সালে ফুটবলীয় ক্যারিয়ার গুটিয়ে উরুগুয়েতে পরিবার নিয়ে বাস করা শুরু করেন তিনি।
টিওয়াসি স্পোর্টস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল ভোরে পরিবারের সঙ্গে পার্টি করছিলেন লাভেজ্জি। এ সময় লাভেজ্জির সঙ্গে ছিলেন তার প্রেমিকাও। সেখানেই পরিবারের কেউ তাকে ছুরিকাঘাত করেন।
ছুরির আঘাতে লাভেজ্জির পেট ও কলারবোনে (কণ্ঠাস্থি) ক্ষতের সৃষ্টি হলে জরুরি সেবাদান নাম্বারে ফোন দেওয়া হয়। তারা এসে তাকে মালদোনাদোর কান্তেগ্রিল সানাতোরিয়াম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার ডাক্তার অগুস্তিনির অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন এই সাবেক আর্জেন্টাইন তারকা।
লাভেজ্জির পরিবার অবশ্য দাবি করেছে, তাকে কেউ ছুরিকাঘাত করেননি বরং ঝুলবাতি পরিবর্তন করতে গিয়ে মই থেকে পিছলে পড়ে আঘাত পেয়েছেন তিনি।
ক্লারিন জানিয়েছে, স্থানীয় পুলিশ লাভেজ্জির ছুরিকাহত হওয়ার ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও এখনও কিছু জানায়নি।
তবে উরুগুয়ের পত্রিকা এল অবজারভার পুলিশের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, পার্টিতে পরিবারের কেউই ছুরি দিয়ে লাভেজ্জিকে আঘাত করেন। পরে ভোর পাঁচটার দিকে জরুরি সেবা চেয়ে ফোন করা হয়।
এল অবজারভারের খবর অনুযায়ী, টাকা পয়সা নিয়ে পারিবারিক ঝামেলার কারণেই তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এরপরই তিনি পাশে থাকা কোনো একটি আসবাবের ওপর পড়ে গিয়ে কলার বোন ভেঙে ফেলেন।
২০০৮ সালে আর্জেন্টিনার অলিম্পিক দলের হয়ে মেসি ও ডি মারিয়ার সঙ্গে লাভেজ্জিও স্বর্ণপদক জেতেন। ২০০৭ সাল থেকে তিনি আর্জেন্টিনা দলের হয়ে খেলেছেন। ২০১৬ সালে শেষবার সুযোগ পান জাতীয় দলে। এ সময়ে ৫১ ম্যাচে ৯ গোল করেন তিনি। আর্জেন্টিনার জার্সিতে ২০১৪ বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলা ছাড়াও ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালেও খেলেন। এই তিন ফাইনালেই আর্জেন্টিনা হেরেছে। ২০১৭ সালে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের দলে থাকলেও কোনো ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পাননি তিনি।
আর্জেন্টিনার ক্লাব এস্তুদিয়ান্তেসকে দিয়ে শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাব ফুটবলে যাত্রা শুরু করেন লাভেজ্জি। এরপর সান লরেঞ্জো ঘুরে ইউরোপে প্রথম খেলেন ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাব নাপোলিতে। ২০০৭-১২ সাল পর্যন্ত সিরি আ’র ক্লাবটিতে খেলে ২০১২ সালে প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে যোগ দেন তিনি। এরপর ২০১৬ সালে চীনে পাড়ি জমান। সেখানে হেবেই চায়না ফরচুনের হয়ে খেলে ২০১৯ সালে অবসরে যান তিনি।