শীতে মাম্পস রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

0
145

ভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট প্রদাহই হলো মাম্পস। এ সমস্যা ছোট কিংবা বড় যেকোনো বয়সীদের মধ্যেই হতে পারে। ঠান্ডা আবহাওয়া বিশেষ করে শীতকালে এ সমস্যা বেশি প্রকট হয়ে ওঠে।

এ রোগটি ছোঁয়াচে ও সংক্রামক। এ রোগে আক্রান্ত হলে ঘাড়, গলা, মুখ ও গাল ফুলে যায়। রোগীর হাঁচি, কাশি, লালা ও প্রস্রাবের মাধ্যমে এই রোগ একজন থেকে অন্যজনে ছড়ায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রোগের কারণ প্যারামিক্সো ভাইরাস শ্রেণির অন্তর্গত আরএনএ ভাইরাস। এ ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে প্যারোটিড গ্রন্থি ফুলে যায়।

লক্ষণ

মাম্পস রোগের কিছু লক্ষণ রয়েছে। সাধারণত মাম্পস রোগে দুই সপ্তাহ আক্রান্ত হলে রোগীর-

১। দুর্বল অনুভব করতে শুরু করেন।
২। টেস্টিকুলারে ব্যথা অনুভব হয়।
৩। খিদে কমে যায়।
৪। মাংসপেশী ও জয়েন্টে ব্যথা অনুভব হয়।
৫। মাথা ব্যথা ও জ্বর থাকে।
৬। চোয়াল, মুখ, গাল, কান, ঘাড় ও গাল ফুলে ওঠে।

বিপজ্জনক লক্ষণ

১। মস্তিষ্কে প্রদাহ বা অ্যানকেফালাইটিস হলে জয়েন্টে তীব্র ব্যথা, আলোর দিকে তাকাতে না পারা ও ঘাড়ে শক্ত ভাব দেখা দেয়।
২। অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ, কানে না শোনা।
৩। পুরুষদের অণ্ডকোষ ও নারীদের তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি।

রোগ নির্ণয়

মাম্পসের এ লক্ষণগুলো রোগীর মধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠলে মুখের লালা বা সোয়াব টেস্ট, প্রস্রাব টেস্ট, গলা ও কানের টেস্ট করলেই ধরা পড়ে প্যারামিক্সো ভাইরাসের অস্তিত্ব। যা দেখে সহজেই বোঝা যায় রোগী মাম্পস রোগে আক্রান্ত কি না।

মাম্পস রোগের চিকিৎসা

মাম্পস রোগীর জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল এবং মাংসপেশীর ফোলাভাব কমানোর জন্য ইবুপ্রোফেন খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক।

ঘরোয়া চিকিৎসা

তবে মাম্পস রোগের ঘরোয়া কিছু কার্যকরী চিকিৎসাও রয়েছে। আসুন, এগুলো একে একে জেনে নিই-

১। ফোলাভাব কমাতে ও আরাম পেতে গরম বা ঠান্ডা সেঁক দিন।
২। শক্ত খাবারের পরিবর্তে রোগীকে তরল খাবার খেতে দিন।
৩। এসময় রোগীকে প্রচুর পানি খাওয়ান।

৪। যতটা সম্ভব ঘরের বাইরে রোগীকে বের হতে না দেয়া।
৫। লজেন্স চুষে খাওয়া। এতে লালাগ্রন্থির রস নির্গত হয়ে ফোলাভাব দ্রুত কমে।
৬। হালকা গরম লবণপানি দিয়ে গরগরা করুন। আদা চিবোন।

৭। গরম দুধ, আদা চা খেতে দিন।
৮। ফোলা ও ব্যথাপ্রবণ জায়গায় হরিতকী-অ্যালোভেরা, ডুমুর পাতা কিংবা শতমূলী পেস্ট ম্যাসাজ করুন।

শরীরে ভাইরাস প্রবেশের ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা দেয়। লক্ষণ দেখা দেয়ার ১ মাসের মধ্যে ভাইরাসের শক্তি কমতে শুরু করে এবং রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে।