রক্ত তিন ধরনের কোষ নিয়ে গঠিত হয়। রক্তের তরল অংশকে বলা হয় প্লাজমা। আর লোহিত রক্ত কণিকা হলো অক্সিজেন বহনকারী কোষ এবং শ্বেত রক্ত কণিকা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। আরেকটি হলো প্লাটিলেট। যা জমাট বাঁধতে সহায়তা করে। ডেঙ্গু হলে হঠাৎ করেই কমতে শুরু করে।
সাধারণ মানবদেহে ডেঙ্গুতে প্লাটিলেট ১.৫ মিলিয়ন থেকে ৪ লক্ষ পর্যন্ত হয়, অন্যদিকে ডেঙ্গুতে প্লাটিলেট সংখ্যা ২০,০০০ থেকে ৪০,০০০ অবধি কমতে থাকে।
ডেঙ্গু হলে প্লাটিলেট কমার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন,
১. প্লাটিলেট উৎপাদনকারী অঞ্চল হাড়ের মজ্জাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে যার ফলে ডেঙ্গুতে প্লাটিলেট গণনা কমে যায়।
২. প্লাটিলেটগুলোর সংখ্যা ডেঙ্গুতে কমে যায় তার কারণ রক্তের কোষগুলো ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তাই প্লাটিলেট ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে। এই সময়কালে অ্যান্টিবডিগুলি উৎপাদিত হয় যা ডেঙ্গুতে প্লাটিলেটগুলো ব্যাপক ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। স্বাভাবিক মাত্রা থেকে এটি নিচে নেমে গেলে মেডিকেলের ভাষায় এটিকে বলে থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া।
প্লাটিলেট কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলছেন, এটি ধ্বংস হয়ে যায়। আর একটি হলো পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হতে পারে না।
বিভিন্ন ভাইরাস সংক্রমণ, যেমন ডেঙ্গু, কোভিড-১৯, হেপাটাইটিস বি-র কারণে প্লাটিলেট কমে যেতে পারে। এ ছাড়া কিছু ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশনে অনেক সময় এ রকম হতে পারে। আবার কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়া এবং ক্যানসার-সম্পর্কিত চিকিৎসা কেমোথেরাপির পরও প্লাটিলেট কমে যেতে পারে।
রক্তের বিভিন্ন রোগ, যেমন লিউকেমিয়া নামক ব্লাড ক্যানসার বা অন্যান্য ব্লাড ক্যানসারে প্লাটিলেট কমে যেতে দেখা যায়। অস্থিমজ্জা-সম্পর্কিত বিভিন্ন রোগেও এ রকম হতে পারে।
অতিরিক্ত মদ্যপান ও লিভারজনিত সমস্যাও প্লাটিলেট কমে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কারণ। রোগ প্রতিরোধ-সম্পর্কিত কিছু রোগ, যেমন আইটিপিতে প্লাটিলেট ধ্বংস হয়ে যায়। প্রেগনেন্সির কিছু জটিল সমস্যায়ও প্লাটিলেট কমে যেতে পারে।




