হেপাটাইটিস-বির চিকিৎসায় পথ দেখাবে ‘ন্যাসভ্যাক’

0
187

হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের চিকিৎসায় বাংলাদেশ, কিউবা ও জাপানের লিভার বিষেশজ্ঞদের যৌথ উদ্ভাবন ‘ন্যাসভ্যাক’ নিয়ে নানা প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের দাবি, ন্যাসভ্যাক হ‌লো হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস চিকিৎসায় সর্বশেষ সংযোজন। এটি একটি থেরাপিউটিক ভ্যাকসিন যা রোগটির চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করছে, যা বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বকেই পথ দেখাবে।

মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ স্টেমসেল অ্যান্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিন সোসাইটির ৭ম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে বক্তারা এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সম্মেলনটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘ন্যাসভ্যাক স্মার্ট ড্রাগ ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের লিভার বিশেষজ্ঞরা কিউবা ও জাপানের বিশেষজ্ঞদের সাথে যৌথভাবে হেপাটাইটিস বির চিকিৎসায় এই ইমিউনথেরাপিটি উদ্ভাবন করেছেন যা বাংলাদেশ ও জাপানে পরিচালিত ফেইজ-১, ২ ও ৩ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। ন্যাসভ্যাক নিয়ে পরিচালিত গবেষণার উপর ভিত্তি করে এ পর্যন্ত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক জার্নালে ২০টিরও বেশি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, যা প্রশংসার দাবি রাখে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্টেম সেল অ্যান্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্টেম সেল অ্যান্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মাহাতাব আল মামুন স্বপ্নীল।

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণায় অনেক দূর এগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানামুখি পদক্ষেপের কারণে দেশে কৃষির পাশাপাশি স্বাস্থ্য গবেষণাও জোরালোভাবে শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা গবেষণা করে স্বল্পমূল্যে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার কিট উদ্ভাবন করতে সমর্থ হয়েছি।

রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিষেধকের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল খুব শীঘ্রই মেডিকেল জেনেটিক বিভাগ চালু করা হবে বলেও জানান তিনি।

ন্যাসক্যাভ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল বলেন, বর্তমানে হেপাটাইটিস-বির চিকিৎসায় যে সমস্ত নিউক্লিওসাইড ও নিউক্লিওটাইড অ্যানালগ ওষুধ মুখে প্রয়োগ করা হচ্ছে, সেগুলো বহু বছর ধরে টানা ব্যবহার করতে হয়। কা‌রো কা‌রো ক্ষেত্রে আজীবন। এরপরও কোনো কো‌নো রোগীর লিভার রোগ নিয়ন্ত্রণে আসে না, আর যারা অনিয়মিত ওষুধ ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি যে শুধু অনেক বেশি তাই-ই নয় বরং তাদের কারও কারও লিভার ফেইলিওরও ডেভেলপ করতে পারে। অন্যদিকে, ন্যাসভ্যাকের মাত্র দশটি ডোজ ছয় মাস ব্যবহার করে তাতেই এ ধরনের ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. সেলিমুর রহমান। বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাপানের ইহিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং অধ্যাপক ডা. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর, কিউবার জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলোজি বিশেষজ্ঞ ডা. জুলিয়া সিজার এগুলার রুবিডো প্রমুখ।