শৈশব থেকে কৈশোরে পদার্পনের মুহূর্তগুলো আবেগে ঠাসা থাকে। একটুতেই অভিমান হয়, একটুতেই ভুল বোঝে এ কারণে পরিবারে তিক্ততার সৃষ্টি হয়। এই অচেনা জগত একদম অজানা কিশোর বয়সীদের কাছে। এ বয়সে একটু বেশি সচেতন হতে হবে অভিভাবকদের।
হঠাৎ এই শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন তাদেরকে আলোড়িত করে, কখনও মানসিকভাবে পীড়া দেয়, কখনও নিজের কাছে হীনমন্য করে তোলে। আমাদের দেশের সংস্কার ও সামাজিক মূল্যবোধের কারণে বড়দের সাথে অলিখিত একটা দুরত্ব থাকে।
বড়রা শিশুদের সাথে শারীরিক এই পরিবর্তনগুলো নিয়ে আলোচনা করতে সংকোচ বোধ করেন। পাঠ্য-পুস্তকেও বয়ঃসন্ধিকালের এই বিষয়টা নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোন সচেতনতা নেই। যার ফলে শিশুরা কিশোর বয়সের শুরতে পুরো ধাঁধার মধ্যে পড়ে যায়। তারা লজ্জ্বিত হয়, নিজেকে প্রতিমূহুর্ত আড়াল করার চেষ্টা করে।
একজন অভিভাবক কিভাবে সন্তানের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়টা মোকাবেলা করবেন? কিভাবে তাকে পূর্ন ধারণা দেবেন জীবনের স্বাভাবিক এই প্রক্রিয়া নিয়ে? আসলে একমাত্র অভিভাবকই পারেন সন্তানের এই নতুন জগতের প্রবেশকে অভিনন্দিত করতে। তাহলে সে এই পরিবর্তনকে সুন্দরভাবে নিতে পারবে।
একজন অভিভাবককে হতে হবে বন্ধুসুলভ। সন্তান তার ভেতরে ঘটে যাওয়া সব কিছু বলতে পারার স্বাচ্ছন্দ্য যেন খুঁজে পায় বাবা মায়ের কাছে, পরস্পরের সম্পর্কটা এমন হতে হবে। বয়সের এই অতি সংবেদনশীল সময়ে সঠিক গাইডেন্স তাদের খুবই দরকার ।
অনেক সময় অভিভাবককে কিছু বিষয় টেকনিক্যালি হ্যান্ডেল করতে হবে। বয়ঃসন্ধিপূর্ব সময়েই তাদেরকে ধীরে ধীরে এগুলো নিয়ে ধারণা দিতে হবে। জানাতে হবে এটি প্রকৃতির স্বাভাবিক একটা আচরন।
শিশুমনের সুস্থ বিকাশের জন্য সঠিক তথ্য পাঠ্যবইয়ের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এতে করে তারা নিজেরাই হরমোনাল পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে সচেতন থাকতে পারবে। এছাড়াও এই সময়ে মানসিক পরিবর্তনের ফলে যে সকল সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে সে সম্মন্ধে সম্যক ধারণা দিতে তাদের ডাক্তার অথবা সাইকোথেরাপিস্টের কাছে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
পরিবার এবং পারিপার্শ্বিক সবার যত্নে কিশোর বয়সটা হয়ে উঠুক দূর্বার আনন্দের।