পানির অপর নাম জীবন। শরীরের জন্য পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে অতিরিক্ত পানি পান স্বাস্থ্যের পক্ষে কিছু ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
মানুষের শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ পানি থেকে তৈরি। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য পানির প্রয়োজন থাকলেও অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই প্রশ্ন জাগে যে, একজন সুস্থ মানুষের দিনে কতটা পানি পান করা উচিত?
প্রতিদিন কতটুকু পানি খাবেন?
দিনে কতটা পানি পান করতে হবে তার কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। বেশিরভাগ ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে একজন সুস্থ ব্যক্তির দৈনিক আট গ্লাস পানি খাওয়া উচিত। পানি খাওয়ার পরিমাণ নির্ভর করে পরিবেশ, ব্যায়াম, গর্ভাবস্থা এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর মতো বিষয়ের ওপর।
অতিরিক্ত পানি খেলে কি হয়?
অতিমাত্রায় পানি পানের ফলে হাইপোনেট্রেমিয়া নামে পানির নেশা হতে পারে। এটি হলে রক্ত প্রবাহে অতিরিক্ত কম সোডিয়ামের মাত্রার কারণে কোষের ভেতরটা ফুলে যেতে পারে। আর এর ফলে খিঁচুনি, কোমার মতো মারাত্মক সমস্যা হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
কীভাবে বুঝবেন বেশি পানি পান করছেন?
১. প্রস্রাবের রং
আমরা কম বেশি পানি পান করছি কিনা তা জানার সবচেয়ে ভালো উপায় হল আমাদের প্রস্রাবের রং। আপনি যদি প্রচুর পরিমাণে পানি পান করেন তবে আপনার প্রস্রাবের রং প্রায়শই পরিষ্কার হবে। যদি প্রস্রাবের রং খুব পরিষ্কার হয়, তাহলে এর মানে হল আপনি অল্প সময়ের মধ্যে খুব বেশি পানি পান করছেন। অন্যদিকে, প্রস্রাবের রং বেশি হলুদ হলে আপনি কম পানি পান করছেন।
২. ঘনঘন বাথরুমে যাওয়া
আপনি যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বার বাথরুমে যান, তার মানে আপনি বেশি পানি পান করছেন। দিনে ৬-৮ বার বাথরুমে যাওয়া স্বাভাবিক হিসাবে বিবেচিত হয়। অন্যদিনে যারা বেশি ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল গ্রহণ করেন তারা সাধারণত ১০ বার বাথরুমে যান, এটাও স্বাভাবিক।
৩. তৃষ্ণা না পেলেও পানি পান
তৃষ্ণা না পেয়ে বারবার পানি পান করলে আপনার সমস্যা হতে পারে। তাই তৃষ্ণা লাগলেই তবে পানি খান।
৪. বমি বমি ভাব
আমরা যখন বেশি পানি পান করি তখন আমাদের কিডনির ওপর চাপ পড়ে এবং তারা শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল বের করতে সক্ষম হয় না। এ কারণে শরীরে তরল পদার্থ জমতে শুরু করে, যার ফলে বমি বমি ভাব ও বমি হয় এবং ডায়রিয়া হয়। এ কারণে সারাদিন ক্লান্তি লেগেই থাকে।
৫. মাথাব্যথা, মাংসপেশির দুর্বলতা ও ব্যথা
শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কম থাকলে মস্তিষ্কের পেশি ফুলে যায় এবং মস্তিষ্কের ওপর চাপ পড়ে, যার ফলে মাথাব্যথা হয়। এর ফলে শ্বাস নিতেও অসুবিধা হতে পারে। সোডিয়ামের অভাবের কারণে পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ব্যথা হয়।
৬. হাত, পা ও ঠোঁটের রঙের পরিবর্তন
আপনি যদি বেশি পানি পান করেন তাহলে আপনার মনে হবে আপনার হাত, পা ও ঠোঁটের রঙে সামান্য পরিবর্তন হয়েছে বা সামান্য ফোলাভাব হয়েছে। শরীরের কোষে প্রদাহ হলে ত্বকও ফুলে যায়।