কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালে শরীর ও মনে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটে। এ সময় চিন্তা-চেতনার সঙ্গে সঙ্গে শারীরিকভাবে মানসিকভাবে বেড়ে উঠতে থাকে তারা।
এটি মূলত কৈশোর ও যৌবনের একটা মধ্যবর্তী পর্যায়ে হয়ে থাকে। ১০-১৩ বছরের মধ্যে যে কোনো সময় মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হয়।
এ সময়ে নিজের জীবন পছন্দ-অপছন্দ, দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে। এ সময় কিশোরীরা স্বাধীনভাবে কিছু ভাবতে শুরু করে সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করে।
হরমোনের প্রভাবে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখা যায় শরীরে। কখনো রাগ করে কখনো আবার খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়, কখনো আবার খুব বেশি খায়, ঠাণ্ডা মেজাজে থাকে।
ওই সময়টাতে বাবা-মায়ের বা অভিভাবককে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হয়। কারণ তাদের আচার-আচরণ অনেক ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়।
তাদের বিশ্বাসের জায়গাটা এ সময় সবার আগে অর্জন করতে হবে। তার পর বুঝিয়ে ধীরে ধীরে বলতে হবে। তাদের ওপর হাত তোলা কিংবা খারাপ আচরণ করা যাবে না।
বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের প্রজনন ক্ষমতা বিকাশ হয়। তাই অবশ্যই কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হয়, এটি যেমন স্কুলের দায়িত্ব, সেই রকম বাবা-মায়েরও দায়িত্ব।
বয়ঃসন্ধিকালীন সবার আগে কিশোরীদের শেখাতে হবে কীভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হয়। কারণ হাইজিন মেইনটেইন না করলে মারাত্মক সংক্রমণ দেখা দেয় শরীরে।
এছাড়া মাসিক চক্র ব্যবস্থাপনা সময় খুবই জরুরি বিষয়। কারণ মাসিকের সময় ন্যাপকিন প্যাড বা কাপড় ব্যবহার করে অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। স্যানিটারি ন্যাপকিন ওয়ান টাইম ব্যবহার করতে হয়। প্রতি ৬ ঘণ্টা পর পর পরিবর্তন করতে হয়।
কাপড় ব্যবহার করলে অবশ্য ভালোমতো পরিষ্কার করে শুকনা কাপড় ব্যবহার করতে হবে। যদি ঠিকমতো এই ব্যবস্থাপনাগুলো না করা হয়, তা হলে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ হতে পারে। এ সংক্রমণের ফলে মেয়েদের জরায়ু, ফেলোপিয়ান টিউব ব্লকসহ নানাবিধ জটিলতা তৈরি করে প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এই সময়ে বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার, সমৃদ্ধ খাবার ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
কৈশোর বয়সটা শরীর গঠনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময সুষম খাবার ও সঙ্গে এক্সারসাইজ এবং নিয়মমতো ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার।
লেখক: ডা. আয়শা আক্তার, সহকারী পরিচালক, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতাল।