তিনজনের ডিএনএ নিয়ে জন্মাল শিশু

0
486
শিশু
ছবি: প্রতীকী

যুক্তরাজ্যে তিনজন ব্যক্তির ডিএনএ ব্যবহার করে একটি শিশুর জন্ম দেওয়া হয়েছে। শিশুটির অধিকাংশ ডিএনএ এসেছে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে। তবে ডিএনএর মাত্র দশমিক ২ শতাংশ এসেছে তৃতীয় ব্যক্তির কাছ থেকে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

মূলত ভয়াবহ মাইটোকন্ড্রিয়াল রোগ নিয়ে শিশুর জন্ম প্রতিরোধ করতেই এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই পদ্ধতি মাইটোকন্ড্রিয়াল ডোনেশন ট্রিটমেন্ট (এমডিটি) নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিতে, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী কোনো নারীর কাছ থেকে তার ডিম্বাণু সংগ্রহ করে ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ পদ্ধতিতে অন্য কোনো দম্পতির ভ্রূণের সঙ্গে মিলিয়ে দেয়া হয়।

শিশুর দেহে তার বাবা মায়ের ডিএনএ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে বিজ্ঞানের বদৌলতে এবার ঘটল ব্যতিক্রমী ঘটনা। যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো তিনজনের ডিএনএ বহন করা এক শিশুর জন্ম হয়েছে।

তিনজনের ডিএনএ স্থাপনের কাজটি করেছে যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসল ফার্টিলিটি সেন্টারের চিকিৎসকরা। তারা জানিয়েছেন, শিশুটির দেহে ৯৯.৮ শতাংশ ডিএনএ এসেছে শিশুটির বাবা মায়ের থেকে। আর শূন্য দশমিক ২ শতাংশ এসেছে তৃতীয় ব্যক্তি, একজন দাতা নারীর কাছ থেকে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ভয়ানক মাইটোকন্ড্রিয়াল রোগ নিরাময়ের জন্যই এ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। কেননা এটি বংশগত রোগ। জন্মের কয়েক ঘণ্টা পরই অথবা জন্মের কয়েকদিন পর এ রোগ শিশুর প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। এখন পর্যন্ত মাইটোকন্ড্রিয়াল রোগে একাধিক শিশুর মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে।। তাই এসব পরিবারে সুস্থ শিশুর জন্ম দেওয়ার একমাত্র উপায় হিসেবে দেখা হচ্ছে এ পদ্ধতিকে। সাধারণত প্রতি ৬০০০ হাজার শিশুর মধ্যে ১ জন শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়।

বিজ্ঞানীরা আরও জানান, মাইটোকন্ড্রিয়া খাবার থেকে মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করে। আর ত্রুটিপূর্ণ মাইটোকন্ড্রিয়া মানবদেহে খাদ্যকে শক্তিতে পরিণত করতে পারে না। এতে শরীরে দেখা দেয় নানা সমস্যা। তবে শিশু ত্রুটিপূর্ণ মাইটোকন্ড্রিয়া পায় শুধু মায়ের কাছ থেকে।

এর আগে ২০১৬ সালে প্রথমবার মতো যুক্তরাষ্ট্রের এক দম্পতি এ প্রযুক্তি গ্রহণ করেন।