কিশোরী মেয়ের পিরিয়ড শুরু, কী করবেন মা

0
146
পিরিয়ড শুরু
ছবি: সংগৃহীত

পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের বিষয়টি নিয়ে, জড়তা বা লজ্জার কিছু নেই। প্রত্যেক মেয়ের জীবনে এটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া।

যতই আমরা আধুনিক হই না কেন, এই ব্যাপারটা নিয়ে এখনও আমাদের সমাজে ঢাক ঢাক গুড় গুড়! তবে হ্যাঁ, আগের তুলনায় পর্দাটা একটু হলেও উঠেছে। তাই মা হিসেবে মেয়ের পাশে গিয়ে আগে দাঁড়ান আপনি আগে। সাধারণত মেয়েরা মায়ের কাছেই এই ব্যাপার নিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আর এর জন্য প্রথম ঋতুবতী মেয়ের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। এই সময় প্রচুর মুড সুইং হয়, তাই শারীরিক যত্নের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর খেয়াল রাখতে হবে।

চাইলে আপনি আপনার প্রথম অভিজ্ঞতা মেয়ের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। পিরিয়ড হয়ে গিয়েছে মানে দুনিয়ার সবার কাছে এটা বলার দরকার নেই যে মেয়ে বড় হয়ে গিয়েছে! আপনার এই ধরনের কথায় আপনার মেয়ে অজানা অস্থিরতায় ভুগতে পারে। হ্যাঁ, প্রথম পিরিয়ডের সময় মেয়ে হয়ত এর নাম কী বা কেন হয় সে সম্পর্কে জানতে চাইবে। শরীরের এমন আচমকা পরিবর্তন হঠাত্‍ এমন কী হলো জানতে চাইবে আপনার কাছেই।

পিরিয়ডের সঠিক বয়স কখন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত ১০-১৬ বছর বয়সে প্রথম পিরিয়ড হয়। তবে শারীরিক গঠনভেদে বয়সের তারতম্য হতে পারে। শরীরের ফ্যাট ও মোট ওজনের উপর নির্ভর করে এর অনুপাত নির্ভর করে। আবার অনেকের একটু দেরি হতে পারে। বেঙ্গালুরুর চিকিত্‍সকের মতে,মেয়েদের মেনস্ট্র‌ুয়াল সাইকেল শুরুর সঠিক সময় নির্দিষ্ট ভাবে বলা সম্ভব নয়। আগে অবশ্য ১৪-১৬ বছর গড় বয়স হিসেবে ধরা হত। এখন মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত সমাজে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ১২-১৩ বছর বয়সে শুরু হয়ে যাচ্ছে। কারোর কারোর ক্ষেত্রে এর আগেও হয়। হায়দরাবাদের গাইনোকলজিস্টের মতে, আমাদের সমাজ যত পরিণত হচ্ছে, ততই ঋতুস্রাব শুরু হওয়া এগিয়ে আসছে। তবে মেয়ের ১৪ পেরিয়ে যাওয়ার পরও যদি পিরিয়ড শুরু না হয় সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি। আবার যদি ছ’বছর বয়স হওয়ার আগেই পিরিয়ড শুরু হয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই তা চিন্তার বিষয়।

কতদিন ধরে চলে?
পিরিয়ডের প্রথমদিতে ২-৭ দিন পর্যন্ত চলতে পারে। কারোর কারোর আবার এর থেকে কম সময় লাগে। তবে অতিরিক্ত হলে সব সময় চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া দরকার।

মা হিসেবে শুরুর দিকে কী করা উচিত?
শরীরে হঠাৎ এমন পরিবর্তন অনেক কিশোরীরই মেনে নিতে পারে না। তাদের মনে ভয় বা স্ট্রেস কাজ করে। কেউ কেউ এই সময় ভয়ে কুঁকড়ে যায়। তাই মা হিসেবে মেয়ের ভীতি কাটাতে পারেন একমাত্র আপনিই। মেয়ের সঙ্গে সহজ হোন, প্রথম দিনটি উদযাপন করুন। মেয়ের পছন্দের কোনও খাবার রেঁধে খাওয়াতে পারেন। উপহার দিয়ে বিষয়টি সহজ স্বাভাবিক করে তুলতে পারেন। এই সময় সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে পারেন বিশেষ করে আয়রন সমৃদ্ধ খাবারও দিতে পারেন।

পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিন
মেনস্ট্রুয়েশনের সময় সবচেয়ে জরুরি হাইজিন, খেয়াল রাখবেন সেটি যেন উপেক্ষিত থেকে না যায়। তাই লুকোছাপা না করে পিরিয়ড শুরুর আগে থেকে এই বিষয়ে কন্যাকে কিছুটা আভাস দিয়ে রাখলে ভালো। প্রতি ৪ ঘণ্টা অন্তর প্যাড বদল করার পরামর্শ দিন। পিরিয়ডের সময় যোনির চারপাশ সব সময় পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দিন। যাতে ইনফেকশনের ঝুঁকি এড়ানো যায় সহজেই। পরিষ্কার ও আরামদায়ক পোশাক পরার পরামর্শ দিন। এই সময় টাইট ও অপরিষ্কার কাপড় থেকে ঘষা লেগে ইনফেকশনের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে।