স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশে কিছু দিন ধরে আবারও ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়ছে। ডেঙ্গু সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতে হলে সবাইকে সজাগ হতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সতর্ক হতে হবে।
রোববার (৭ মে) দুপুরে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে মশার কামড় থেকে মুক্ত থাকতে হবে। আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বাসাবাড়ির ছাদ, আঙিনায় যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও বিশ্বজুড়ে টিকাদান সপ্তাহ পালিত হয়েছে। আমরা প্রতি বছর সাড়ে দুই কোটি শিশুকে টিকা দিয়ে থাকি। সব মিলিয়ে প্রায় ১০টিরও বেশি অসুখের টিকা দেওয়া হয়ে থাকে। এই প্রোগ্রামের জন্য এক লাখ ২০ হাজার সেন্টার করে থাকি। এছাড়াও আমরা ১৫ থেকে ৪৯ বছরের নারীদের টিকা দিয়ে থাকি। তাদেরও ১০ রকমের রোগের টিকা দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ টিকার প্রতি আগ্রহী। তারা খুবই আনন্দের সঙ্গে টিকা নেয়। আমাদের মায়েরা শিশুদের টিকা দিতে আগ্রহী। তারাই আমাদের টিকাদানে সফলতার পেছনের বড় কারণ হিসেবে কাজ করে। এক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছাও বড় কারণ। এই কার্যক্রমে বিরাট একটা লজিস্টিক সাপোর্ট লাগে, যা সরকার দেয়। টিকাদানের সময়ে অন্যান্য কাজকর্মও আমরা করে যাচ্ছি।
সফলতার তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ৯৫ শতাংশ শিশু টিকার আওতায় এসেছে, যা ২০০১ সালেও ছিল ৫২ শতাংশ। আর নারীদের মধ্যে টিকার হার ৮০ শতাংশ। টিকায় আমাদের অনেক সফলতা আছে, সফলতার স্বীকৃতি পেয়েছি অনেক। বড় স্বীকৃতি হলো আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন হিরো হয়েছেন। এই টিকার কারণেই আমরা এসডিজি অর্জন করেছি। টিকার কারণে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে। টিকা এখানে বড় অবদান রেখেছে। আমাদের গড় আয়ু ৭৩, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়েও যা ছিল ৫০।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনায় বিশ্বে ৭০ লাখ মানুষ মারা গেছে, ৭০ কোটি লোক আক্রান্ত হয়েছে। আমরা ৩৬ কোটি টিকা দিতে সক্ষম হয়েছি। টিকা দেওয়ার কারণেই আমাদের দেশে মৃত্যুহার কম ছিল।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে প্রায় ৭০০টি স্থায়ী ও এক লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাকেন্দ্রের মাধ্যমে শিশু ও নারীদের সরকারিভাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ১০টি মারাত্মক সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে জীবন রক্ষাকারী টিকা দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া আরও কয়েকটি টিকা অচিরেই নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে যুক্ত হতে চলেছে। যার মধ্যে এইচপিডি টিকা অন্যতম। যার সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা আমাদের নারীদের জরায়ুমুখের ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে সুরক্ষা দিতে পারবো।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডা. বরদান জুং রানা প্রমুখ।