প্রতি বছর ২৪ মার্চ বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মা দিবস পালিত হয়। মানুষের মধ্যে যক্ষ্মা নিয়ে সচেতনতার প্রচার করতেই এটা পালন করা হয়। তবুও মানুষের মধ্যে এখনও যক্ষ্মা নিয়ে বিভিন্ন ভুল ধারণা রয়েছে।
বিশ্বের ১০টি মৃত্যুর কারণের মধ্যে অন্যতম এই যক্ষ্মা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, প্রতিদিন বিশ্বে ৪ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় মারা যান এবং ৩০ হাজার আক্রান্ত হন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যক্ষ্মা একটি ব্যাক্টেরিয়া বাহিত রোগ। মাইক্রোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস নামক ব্যাক্টেরিয়া শ্বাসযন্ত্রকে সংক্রমিত করে। যার ফলে এই যক্ষ্মা রোগ হয়। করোনাভাইরাসের মতো এই ব্যাক্টেরিয়াও বাতাসে ভেসে বেড়ানো ড্রপলেটের মধ্যে দিয়ে শরীরে সংক্রমিত হয়ে থাকে। একজনের হাঁচি-কাশি থেকে দ্রুত এটি অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে যক্ষ্মা রোগ নিয়ে মানুষের মধ্যে বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে, যা অবিলম্বে দূর করা ভীষণ জরুরি। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এই সময়ের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী চলুন জেনে নেয়া যাক সেগুলো।
যক্ষ্মা শুধু ফুসফুসেই হয়: অনেকেই মনে করেন, যক্ষ্মা শুধু ফুসফুসেই হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, যক্ষ্মার জীবাণু যে কেবল ফুসফুসকে আক্রান্ত করে তা নয়, এটি মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে, ত্বক, অন্ত্র, লিভার, কিডনি, হাড়সহ দেহের যেকোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সংক্রমণ হতে পারে। তবে শরীরের অন্য অঙ্গে সংক্রমণ হলে আক্রান্তের থেকে অন্য কারও শরীরে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কম। তাই যক্ষ্মা মানেই তা ছোঁয়াচে, এমন ভেবে নেয়ার কোনো কারণ নেই।
জিনবাহিত রোগ: অনেকেই মনে করেন যক্ষ্মা একটি জেনেটিক রোগ। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, যক্ষ্মা কোনো জিনবাহিত রোগ নয়। এই ব্যাক্টেরিয়া যেকোনো সময় যে কাউকে সংক্রমিত করতে পারে। বাবা-মায়ের যক্ষ্মা হলেই সন্তনেরও যে যক্ষ্মা রোগ হবে, এমন নয়। এই তথ্যেরও কোনো রকম সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
যক্ষ্মার চিকিৎসা নেই: অনেকেই মনে করেন এই রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা এমন কথা বলেন না। তাদের মতে, প্রাথমিক পর্যায় এই রোগ ধরা পরলে ওষুধের মাধ্যমেই সারানো যায়। তবে খুব বেশি দিন কাশি হলে কিংবা কাশির সঙ্গে রক্ত বের হলে জটিলতা দেখা দেয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার।