পুড়ে যাওয়ার মতো সমস্যায় পড়েন ছোট থেকে বড় অনেকে। ত্বক মানব শরীরের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই ত্বকই বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন থেকে আমাদের রক্ষা করে এবং শরীর থেকে বিভিন্ন তরল বের হয়ে যাওয়া রোধ করে। বিভিন্ন বিরূপ পরিস্থিতি থেকে নিজেদের রক্ষা করা ত্বকই যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে পড়তে হয় নানা ধরনের সমস্যার মুখে।
ক্লেভ ক্লিনিকে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট বলা হয়েছে, বিভিন্নভাবে পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে। তাপ, কেমিক্যাল, সূর্যালোক, বিদ্যুৎ ও রেডিয়েশনের কারণে ত্বকের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে দুর্ঘটনাবশত। তবে পোড়া ক্ষত কতটা গভীর সেটা জেনে নেয়া জরুরি। তারপর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা শুরু করতে হবে তা না হলে পোড়া থেকেই হতে পারে ইনফেকশন।
পোড়াটা যে ধরনেরই হোক না কেন সেটা পরিষ্কার রাখা এবং ঠিকমতো ব্যান্ডেজ করে রাখা জরুরি। সেই সঙ্গে ক্ষত যদি খুব গভীর হয় তাহলে নিয়মিত ড্রেসিংও করতে হবে।
ফার্স্ট ডিগ্রি বার্ন হলে প্রথমত পুড়ে যাওয়া অংশের ওপর বেশি বেশি ঠাণ্ডা পানি প্রবাহিত করতে হবে। এক্ষেত্রে বরফ দেয়া ঠিক হবে না। তবে সূর্যালোকে ত্বক পুড়ে গেলে অ্যালোভেরা জেল দিতে পারেন। থার্মাল বার্ন হলে দিতে হবে অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম। সেই সঙ্গে গজ কাপড় দিয়ে হালকা করে ঢেকে রাখতে হবে ক্ষতস্থান। পাশাপাশি কিছু ব্যথা কমানোর ওষুধও খেতে হতে পারে।
সেকেন্ড ডিগ্রি বার্নের ক্ষেত্রেও চিকিৎসা অনেকটা ফার্স্ট ডিগ্রি বার্নের মতোই। তবে এক্ষেত্রে হয়তো চিকিৎসকরা আর একটু শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহারের পরামর্শ দিতে পারেন, যেটার মধ্যে সিলভার রয়েছে। এর ব্যবহারে ব্যাকটেরিয়া মরে যায়। পুড়ে যাওয়া অংশটি উঁচু করে রাখলে রোগীর ব্যথা ও ফোলা ভাব কিছুটা কমতে পারে।
থার্ড ডিগ্রি বার্ন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের অধীনে থেকে চিকিৎসা করতে হবে। সেক্ষেত্রে স্কিন গ্রাফট করারও দরকার হতে পারে। পোড়া জায়গায় ফোসকা পড়ে গেলে তা গলিয়ে না ফেলা ভালো। এতে ইনফেকশনের আশঙ্কা থাকে। যদি পোড়া জায়গা অল্প হয়, তাতে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে বার্না, বার্নল বা মিল্কক্রিম লাগিয়ে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঢেকে হাসপাতালে আনতে হবে। বাসায় যদি কিছু না থাকে ডিমের সাদা অংশ অথবা নিওবার্নিয়া মলম লাগাতে পারেন।
কোনো অবস্থায় পুড়ে যাওয়া রোগীকে টুথপেস্ট, গাছের বাকল, পাতা অথবা মসলা পোড়া স্থানে লাগানো যাবে না। রোগী বেশি পরিমাণে পুড়ে গেলে স্যালাইন দেয়া খুব জরুরি। তাই দ্রুত তাকে হাসপাতালে পাঠাতে হবে। অনেক সময় আগুনে শ্বাসনালি পুড়ে গেলে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা আইসিইউ সাপোর্ট দরকার হয়।






