শিশুদের ডায়রিয়ার অন্যতম প্রধান কারণ রোটা ভাইরাস। যদিও রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া মূলত শীতকালে হয়; তবে এর প্রতিরোধ শুরু করতে হবে শিশু জন্মের পর থেকেই।
কেন এত সতর্কতা?
এই ভাইরাসের আক্রমণে শিশুরা বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। রোটা ভাইরাস ডায়রিয়ায় আক্রান্ত কোনো মানুষ সঠিকভাবে হাত না ধুলে– তাঁর কাছ থেকে শিশু কোনো অপরিচ্ছন্ন খেলনা বা দরজার নব ধরলে স্পর্শের মাধ্যমে এবং হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।
সাধারণত ভাইরাস আক্রমণের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শিশুর জ্বর, বমি, পেট ব্যথা ও ডায়রিয়া শুরু হয়। ভয়ের ব্যাপার হলো, এই ডায়রিয়ার স্থায়িত্ব হতে পারে ২১ দিন পর্যন্ত। এই সময়ে ডায়রিয়ার কারণে শিশুর শরীর থেকে প্রচুর পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। পাশাপাশি শিশুর শরীরে সোডিয়াম-পটাশিয়ামের মতো বিভিন্ন উপাদানের কমতি দেখা যায়। ফলে শিশুর অরুচি, দুর্বলতা, ওজন কমে যাওয়া, পানিশূন্যতা এবং মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
রোটা ভাইরাস টিকা দেওয়ার সময় ও ডোজ
শিশুকে রোটা ভাইরাসের প্রথম টিকাটি অবশ্যই জন্মের ৬ থেকে ১৫ সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে। শিশুর দেড় মাস বয়সের আগে এ টিকা দেওয়া যাবে না।
মুখে খাওয়ার এই টিকার দুটি ধরন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, একটির নাম রোটারিক্স (আরভি১) ও অপরটির নাম রোটাটেক (আরভি৫)। রোটারিক্সের ২টি ডোজ, প্রথমটি বাচ্চার ২ মাস ও দ্বিতীয়টি ৪ মাস বয়সে দিতে বলা হয়। অন্যদিকে রোটাটেক ভ্যাকসিনটি শিশুর জন্মের দ্বিতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ মাসে দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল, আমেরিকা।
টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের মধ্যে ৪ সপ্তাহের ব্যবধান থাকা বাঞ্ছনীয়; তবে বাচ্চার জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, পাতলা পায়খানা থাকাকালীন টিকা দেওয়া যাবে না।
টিকা দিলেই কি শিশু ডায়রিয়ামুক্ত?
না, টিকা দিলেই যে আপনার শিশু ডায়রিয়া মুক্ত থাকবে– এ কথা বলা যায় না। কিন্তু এই টিকা আপনার শিশুর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও সুদৃঢ় করে। ফলে আপনার শিশু রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার ডায়রিয়ার পরিমাণ ও স্থায়ত্বি কম হবে, শিশুর দুর্বলতা তুলনামূলকভাবে কম হবে।
বাংলাদেশ সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে (ইপিআই) রোটা ভাইরাসের টিকা অন্তর্ভুক্ত নয়, তাই নিজ উদ্যোগেই বাচ্চাকে এই টিকা দিতে হবে।






