রাগকে বশে রাখবেন যেভাবে

0
274

রাগ হল মানুষের আবেগের বহিঃপ্রকাশ এবং একটি স্বাভাবিক অনুভূতি। কর্মস্থল বা বাসা কোথাও সমস্যার মধ্যে দিয়ে গেলে বা কোনো ঘটনায় আমরা যেমন খুশি কিংবা মন খারাপ করি, তেমনি কোনো কোনো ঘটনায় রাগান্বিত হই।

একটি নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত রাগ মেনে নেয়া গেলেও, মাত্রাবিহীন রাগারাগি কারো কাম্য নয়। অতিরিক্ত রাগ স্বাস্থ্যহানিকর এবং সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়।

তাই সুন্দর ও সুস্থ জীবনযাপনে প্রয়োজন অতিরিক্ত রাগ নিয়ন্ত্রণ। চলুন জেনে নেই অতিরিক্ত রাগ নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায়,

১. অতিরিক্ত রাগ উঠে গেলে ১০০ থেকে উল্টো গণনা শুরু করুন। এতে করে আপনার রাগের কারণে হওয়া দ্রুত হৃদস্পন্দন ধীর হয়ে যাবে এবং রাগ অনেকটাই কমে আসবে।

২. রাগ যত বাড়তে থাকে তার সাথে শ্বাস-প্রশ্বাস ও অগভীর হয়ে ওঠে। তাই অতিরিক্ত রাগ উঠে গেলে শ্বাস-প্রশ্বাস ধীরে ধীরে নিতে হবে এবং নাক দিয়ে ধীর, গভীর শ্বাস নেওয়ার কিছুক্ষণ পর তা মুখ দিয়ে বের করে দিতে হবে। এভাবে কয়েকবার করলেই রাগ অনেকটা কমবে।

৩. রাগ কমানোর জন্য ব্যায়ামকে বিশ্বস্ত উৎস বলা হয় যা স্নায়ু শান্ত করতে পারে। তাই রাগ বেশি মনে হলেই হাঁটতে যান, সাইকেল চালান বা কিছু ব্যায়াম করুন। এতে করে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সচল থাকবে যা মন ও শরীরের জন্য ইতিবাচক।

৪. নিয়মিত একটু সময়ের জন্য মেডিটেশন বা ধ্যান করার চেষ্টা করুন। আকস্মিকভাবে রেগে যাওয়ার রোগ থাকলে সেটাও সেরে যেতে পারে নিয়মিত ধ্যানে। ধ্যানের ফলে আপনার ব্যক্তিত্ব আরও শক্তিশালী হবে।

৫. রাগ কমানোর আরেক কার্যকরী উপায় হচ্ছে মিউজিক বা জ্ঞান শোনা। রাগ উঠে গেলে আপনার পছন্দের গান শুনুন। পছন্দের মিউজিক আপনার রাগের অনুভূতি নিমেষেই দূর করে দিবে।

৬. রাগ উঠে গেলে হুট করে কোনো কথা বা কাজ করে বসবেন না। এতে করে অপরপক্ষ কষ্ট পেতে পারে, সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। প্রয়োজন হলে সেই মানুষটার সাথে কিছুক্ষণ কথা বন্ধ রাখুন।

৭. যদি রাগ অপ্রকাশিত থেকে যায় তবে প্রিয় মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। কেমন অনুভব করছেন সে সম্পর্কে কাছের কারো সঙ্গে যেমন বাবা-মা বা প্রিয় কোন বন্ধুর সঙ্গে কথা বললে মনের চাপ অনেকটাই কমে যেতে পারে। এ ছাড়া পেশাদার কাউন্সিলিং করেন এমন কারো শরণাপন্ন হতে পারেন মনের ভাব প্রকাশের জন্য।

৮. নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন৷ কথা কাটাকাটির কোনও পরিবেশ তৈরি হওয়ার আগেই , হালকা ঠাট্টা বা প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দিন৷ রাগ কমানোর জন্য খানিকটা হাসি-ঠাট্টা করা যেতে পারে, তাতে মনটা হালকা হয়ে যায়।

৯. রাগকে নিজের মধ্যে পুষে না রেখে, ক্ষমা করতে শিখুন। ক্ষমা একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। কাউকে ক্ষমা করা শক্তিশালী মানসিকতার লক্ষণ। নিজের মধ্যে রাগ পুষে রাখলে নিজের ভেতরের তিক্ততা আপনাকে আরও গ্রাস করবে। কাউকে ক্ষমা করার পর আপনি অনুভব করবেন যে আপনার রাগ সরে যাচ্ছে।

১০. কোন অবস্থায় আপনি কেন রাগ করছেন বা কেমন প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন সেগুলো একটি খাতায় লিখে রাখুন। কীভাবে আপনার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান সেটিও লিখে ফেলুন এবং বারবার নোটটি পড়ুন।এই পদ্ধতিটি নিজের রাগকে নিজেই নিয়ন্ত্রণ করার শক্তি যোগাবে।

সূত্র: হেলথলাইন।