বিয়ের জন্য পাত্র এবং পাত্রী পারিবারিকভাবে পছন্দ করা হলে সে বিয়েকে বলা হয় অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ। এমন বিয়ে মূলত চোখ বেঁধে পানিতে ডুব দেয়ার মতো। এমন মন্তব্যের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা দেখিয়েছেন হাজারো কারণ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে প্রকাশিত হওয়া এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নিজে পছন্দ করে বিয়ে করার চেয়ে দ্বিগুণ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ বা পারিবারিকভাবে ঠিক করা বিয়েতে।
সমীক্ষা বিশ্লেষণ করে মনোবিদরা বলছেন, পারিবারিক বিয়ের ক্ষেত্রে অচেনা দুইজন বিয়ের পিঁড়িতে বসে। এরপর এ বিয়েকে কেন্দ্র করেই জীবনের লম্বা সময়টাকে বয়ে নিয়ে চলে। এমন বিয়েতে মানসিক অ্যাটাচমেন্ট তো থাকেই না বরং বিয়ে পরবর্তী সময়ে সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে তৈরি হয় বিরাট ঝামেলা।
এদিকে একই কথা বলছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিংক ভিলাও। তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় পারিবারিকভাবে বিয়ের ৫টি কমন সমস্যার কথা। আসুন তা একে একে জেনে নিই-
১। পারিবারিকভাবে বিয়ে হলেও বিয়ের পর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে দুই পরিবারের শ্বশুর শাশুড়ি। যার আঁচ এসে পড়ে নতুন দম্পতিদের মধ্যেও। কার বাবা মা বেশি ভালো এ নিয়ে প্রায়ই দুজনের ঝগড়া হতে দেখা যায়। এ ঝগড়ায় একে অন্যের চেয়ে এগিয়ে থাকার এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা চালু থাকে।
২। অ্যারেঞ্জ ম্যারেজের দ্বিতীয় সমস্যা হলো বিয়ের কনেকে দিনের বেশি সময়টা রান্নাঘর ও সংসার সামলাতেই কাজ করতে হবে। শ্বশুরবাড়ির এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত থাকে, পাত্রী চাকরি করলেও সংসারের কাজ সামলিয়েই তাকে অফিস যেতে হবে। আর ঘরের কাজ না করলে অফিসের বেতন তুলে দিতে হবে তাদের হাতে।
৩। বিয়ের ১ থেকে ২ বছরের মাথায় পরিবারে প্রথম সদস্য জন্ম দেয়ার চাপ থাকে বিয়ের পাত্রীর।
৪। পারিবারিকভাবে বিয়ের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছেলের আয়ের ওপর বেশি জোর দেন মেয়েপক্ষের পরিবার। কোনো কারণে সে আয়ে ভাটা পরলে বিয়ের সম্পর্কও তখন নড়বড়ে হতে শুরু করে।
৫। অ্যারেঞ্জ ম্যারেজে যেহেতু দুই অচেনা ব্যক্তি বিয়ের পিঁড়িতে বসে সেহেতু তাদের দুজনের মধ্যে মানসিক সমতা হওয়ার সুযোগ একেবারেই নেই। তবে ক্ষেত্রবিশেষে এই মানসিক সমতা হলেও এটা একেবারেই লটারির মতো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যারেঞ্জ ম্যারেজের দম্পতিদের মতের মিল, চিন্তাভাবনা একেবারেই এক হয় না। আর এ কারণে সম্পর্কের সমীকরণ হয়ে ওঠে জটিল, নয়তো সম্পর্ক এগোয় বিচ্ছেদের দিকে।
তাই বিয়ের ক্ষেত্রে নিজে পছন্দ করা পাত্র পাত্রীকেই বেছে নিন। চেনা জানা মানুষের সবটা জেনে তবেই বিয়ের পিঁড়িতে বসার সঠিক সিদ্ধান্ত অনিশ্চিত জীবন থেকে অনেকটাই মুক্তি দেবে। তবে তার মানে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ ভালো নয়, তাও কিন্তু নয়।
যদি পারিবারিকভাবে বিয়ে করতেই হয় তবে বিয়ের পাত্র পাত্রী দুজন দুজনের সঙ্গে কথা বলে একে অন্যের মানসিক চিন্তা ভাবনাকে বুঝতে চেষ্টা করুন। তারপরই পা বাড়ান বিয়ের সম্পর্কে। তবেই বিয়ের পরবর্তী ঝামেলা থেকে সহজেই নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন।






