গর্ভাবস্থার পরে মায়ের গর্ভে কীভাবে দুই ভ্রূণ বেড়ে উঠছে তার উপরেই নির্ভর করে গর্ভকালীন জটিলতা কতটা। মোমো যমজদের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা সেরকমই। ডাক্তাররা বলেন অত্যন্ত বিরল এই গর্ভাবস্থা। প্রতি ৩৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার জনের মধ্যে মাত্র একজনের হতে পারে। শুধু তাই নয়, মোমো যমজ গর্ভে বেড়ে উঠলে নানারকম জটিলতা দেখা যায়। সন্তান বাঁচবে কিনা বা সুস্থ সন্তান জন্মাবে কিনা সেটাও চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে। অনেক সময়েই দুই শিশু জুড়ে গিয়ে কনজয়েন্ড টুইনস তৈরি হয়। এই ধরনের শিশুদের শরীরের বিভিন্ন অংশ জোড়া থাকে।
সাধারণত গর্ভে থাকা প্রতিটি ভ্রূণের জন্য আলাদা থলি, আলাদা প্ল্যাসেন্টা বা ফুল এবং ‘ফ্লুইড থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে সাধারণত একই প্লাসেন্টা ও একই অ্যামনিওটিক থলি থাকে। মায়ের শরীর থেকে আসা তরল একই প্লাসেন্টা থেকে ভাগ করে নেয় যমজরা। ভ্রূণ ও মায়ের জরায়ুর প্রাচীরের ঘনিষ্ঠ সংযোগ স্থাপন করে এই প্লাসেন্টা। যার মাধ্যমে মা ও ভ্রূণের মধ্যে বিভিন্ন পদার্থের আদানপ্রদান ঘটে। অর্থাৎ, মায়ের শরীর থেকে ওই জরায়ুর ফুলের মাধ্যমেই বিকাশের রসদ পায় ভ্রূণ।
মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীতে শুক্রাণু আর ডিম্বাণুর মিলনের ফলে তৈরি হয় জাইগোট। শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর এরূপ মিলনের প্রক্রিয়াকে বলা হয় নিষেক।এরপর ধীরে ধীরে জাইগোট বিভাজনের মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রাণীর অবয়ব ধারণ করে। নিষেকের পর থেকে সন্তান প্রসবের আগপর্যন্ত ভ্রূণ মায়ের গর্ভেই লালিত পালিত হয়। মানুষের ক্ষেত্রে গর্ভকাল সাধারণত ৩৭-৪২ সপ্তাহ। নিষেকের ৯ সপ্তাহ পর থেকে শিশুর জন্ম হওয়া পর্যন্ত সময়কে বলা হয় ফিটাল পিরিয়ড। মূলত একটি শুক্রাণু ও একটি ডিম্বাণুর মিলনের ফলেই তৈরি হয় একটি জাইগোট। গর্ভকালীন জাইগোটের ক্রমাগত বিভাজনের মাধ্যমে বেড়ে ওঠে মানবভ্রূণ।
কিন্তু যমজ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এ প্রক্রিয়ায় রয়েছে অনেক ভিন্নতা। যমজ বাচ্চা মূলত হয় দুই ধরনের: মনোজাইগোটিক বা আইডেন্টিক্যাল যমজ, ও ডাইজাইগোটিক যমজ। কখনও যদি দুটি শুক্রাণু ও দুটি ডিম্বাণুর মিলনে দুটি জাইগোট তৈরি হয়, তবে ওই দুটি জাইগোটের বিভাজনে যে যমজ সন্তানের জন্ম হয় তারা হল ডাইজাইগোটিক যমজ।
অপরদিকে, মনোজাইগোটিক যমজে একটিমাত্র জাইগোটই তৈরি হয়। কিন্তু জাইগোটের বিভাজনের শুরুর দিকে জাইগোট বিভাজিত হয়ে দুটি ভ্রূণ তৈরি করে। ফলে এভাবে যে যমজ সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়, তারা হল মনোজাইগোটিক যমজ। ৭০ শতাংশ মনোজাইগোটিক যমজ একটিমাত্র অমরার মাধ্যমে মায়ের দেহের সাথে যুক্ত থেকে খাদ্য, পুষ্টি সংগ্রহ করে। এমন যমজদের বলা হয় মনোকোরিওনিক (একই অমরাবিশিষ্ট) মনোজাইগোটিক যমজ। এভাবে একই অমরার মাধ্যমে মায়ের দেহের সাথে যুক্ত থেকে বেড়ে ওঠে দুটি নতুন প্রাণ।
অপরদিকে, মনোজাইগোটিক যমজে একটিমাত্র জাইগোটই তৈরি হয়। কিন্তু জাইগোটের বিভাজনের শুরুর দিকে জাইগোট বিভাজিত হয়ে দুটি ভ্রূণ তৈরি করে। ফলে এভাবে যে যমজ সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়, তারা হলো মনোজাইগোটিক যমজ। ৭০ শতাংশ মনোজাইগোটিক যমজ একটিমাত্র অমরার মাধ্যমে মায়ের দেহের সাথে যুক্ত থেকে খাদ্য, পুষ্টি সংগ্রহ করে। এমন যমজদের বলা হয় মনোকোরিওনিক (একই অমরাবিশিষ্ট) মনোজাইগোটিক যমজ। এভাবে একই অমরার মাধ্যমে মায়ের দেহের সাথে যুক্ত থেকে বেড়ে ওঠে দুটি নতুন প্রাণ।
আমেরিকার অ্যালাবামা শহরে এমনই মনোকোরিওনিক যমজের জন্ম দিয়েছেন ব্রিটনি। একেবারে বিরল এই গর্ভবস্থা প্রথম থেকেই ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। গর্ভপাত, ভ্রূণে জন্মগত ত্রুটি, জন্ম দেওয়ার সময়ে নানা রকম সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল বেশি। কিন্তু শেষে সুস্থ যমজই প্রসব করেছেন ব্রিটনি।