বয়স কত হলে নিয়মিত ব্লাডপ্রেশার মাপা জরুরি?

0
134

উচ্চ রক্তচাপ হলো ‘সাইলেন্ট কিলার’। এই রোগ নিয়ে অবহেলা করলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক থেকে শুরু করে একাধিক জটিল রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। তাই হাইপারটেনশন নিয়ে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই নিয়মিত প্রেশার পরীক্ষা করেন না। ফলে সমস্যা থাকলেও তা ধরা পড়ে না। কিন্তু ধীরে ধীরে বিপদ বাড়তে থাকে। তাই একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে নিয়মিত রক্তচাপ মাপা জরুরি হয়ে পড়ে। এতে বড়সড় বিপদ এড়ানো যায়।

তবে সবারই সাধারণ জিজ্ঞাসা, ঠিক কোন বয়স থেকে নিয়মিত বিপি মাপতে হবে? আর সেই উত্তরটা জানিয়েছেন ডা. রুদ্রজিৎ পাল।

রক্তচাপ কী?
প্রবাহিত হওয়ার সময় রক্তনালীর অভ্যন্তরীণ দেয়ালে রক্ত যেই চাপ তৈরি করে, তাকে বলা হয় রক্তচাপ। এই প্রেশার সাধারণত দুই ধরনের হয়, উপরের প্রেশার হলো সিস্টোলিক। আর নীচের প্রেশার হলো ডায়াস্টোলিক। এক্ষেত্রে সিস্টোলিক প্রেশার ১৩০ বা ডায়াস্টোলিক প্রেশার ৮০ পার হলেই হাই প্রেশার বলে ধরে নিতে হয়। তবে একবার রিডিং নিয়ে এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় না। পরপর ৩ দিন রিডিং নেয়া জরুরি। তার পর সিদ্ধান্তে আসা যায়।

কোন বয়স থেকে বিপি মাপবেন?

এ বিষয়ে ডা. রুদ্রজিৎ পাল বলেন, আজকাল অনেকে কম বয়সেও হাই বিপিতে ভুগছেন। তাই এখন বয়স মোটামুটি ২০ পেরলেই অন্তত একবার বিপি চেক করা জরুরি। রিডিং ঠিক থাকলে তার পর আর করার প্রয়োজন নেই। তবে বয়স যদি ৩০ পেরিয়ে যায়, তখন নিয়মিত বিপি মাপতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতি ৬ মাস অন্তর একবার রিডিং নেয়া জরুরি। একমাত্র এই নিয়মটা মেনে চললে রোগকে প্রথম ধাপে চিহ্নিত করা গেলে তার চিকিৎসা করা সম্ভব হবে।’

এসব লক্ষণে সাবধান

রক্তচাপ বাড়লে মাথা ঘুরতে পারে, মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। সেই সঙ্গে ঘাড়ে যন্ত্রণা হওয়াও সম্ভব। এছাড়া শ্বাসকষ্টের আশঙ্কাও থাকে। তাই এ ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব বিপি মাপুন। এখন প্রতিটা বাড়িতেই ডিজিটাল বিপি মাপার মেশিন থাকে। সেই যন্ত্রেই প্রথমে মেপে নিন। সেখানে খারাপ কিছু দেখলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আশা করছি, এই নিয়মটা মেনে চললে বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

কাদের ঝুঁকি বেশি?

ওজন বেশি থাকলে একাধিক রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। আর সেসব রোগের মধ্যে হাইপারটেনশনের নাম উপরের দিকে থাকে। তাই যাদের ওজন বেশি, তারা তা কমানোর চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া যাদের এরইমধ্যে ডায়াবেটিকস, থাইরয়েড বা অন্য কোনো ক্রনিক অসুখ রয়েছে, তাদেরও হাই বিপির আশঙ্কা থাকে। পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এই রোগ থাকলেও শরীরে বাসা বাঁধতে পারে হাই বিপি। তাই সাবধান হওয়া দরকার।

চিকিৎসা জরুরি এ বিষয়ে ডা. পাল বলেন, বিপি বাড়লে নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে। এটা হলো প্রথম কাজ। এর পাশাপাশি লবণ খাওয়া কমাতে হবে। কাঁচা লবণ খাওয়া তো একবারেই বাদ দিতে হবে। একই সঙ্গে ভাজা খাবার, ফাস্ট ফুড এবং প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শাক, সবজি বেশি করে খেতে হবে। পাশাপাশি দিনে ৩০ মিনিট ঘাম ঝরিয়ে বাড়িতে বা জিমে গিয়ে ব্যায়াম করা আবশ্যক। তাতে এ ধরনের সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব।’