প্রকৃতিতে যত সুন্দর সৃষ্টি রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম ফুল। আর এর মধ্যে এক অনন্য ফুল অপরাজিতা। এই ফুলটি নীলকণ্ঠ নামেও বেশ পরিচিত।
মালাক্কা দ্বীপ বা টারনেট থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে ফুলটি। ভারতের কেরালায় এই ফুলটির নাম শঙ্খপুষ্পী। নীল রং ছাড়াও সাদা, হালকা বেগুনি, হলুদ ও লাল রঙেরও অপরাজিতা ফুল দেখতে পাওয়া যায়।
এই ফুল, লতা, পাতা, শিকড়ে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা মানব শরীরে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। যেমন-
লিভার সুরক্ষা: অপরাজিতার নীল চা পলিফেনল ও ফ্লাভোনোয়েড যৌগ লিভার এনজাইমের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই লিভারের সুরক্ষায় অসাধারণ ভূমিকা পালন করে অপরাজিতার ফুলের চা।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: অপরাজিতা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে অপরাজিতা।
অ্যাজমা প্রতিরোধ: অপরাজিতায় বিদ্যমান স্যাপোনিন ও ফ্লাভোনোয়িড যৌগ অ্যাজমা প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
ক্যানসার প্রতিরোধ: অপরাজিতায় থাকা অ্যান্থোসায়ানিন মানব দেহে ফ্রি রেডিক্যাল তৈরিতে বাধা দেয়, যা ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে অপরাজিতা: আলঝেইমার রোগের চিকিৎসায় অপরাজিতা ব্যবহার করেন চিকিৎসকরা। কারণ এই ফুল স্মৃতিশক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়: এটি রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডস, কোলেস্টেরল ও এলডিএলের পরিমাণ কমায়। তাই হৃদ্রোগের ঝুঁকি মুক্ত থাকতে ডায়েটে বেছে নিতে পারেন অপরাজিতার চা।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বয়ঃসন্ধিকালীন উন্মাদ রোগ, গলগণ্ড রোগ, ফোলা রোগ, ঘন ঘন প্রস্রাব, স্বরভঙ্গ, শুষ্ক কাশি, আধকপালে ব্যথা ইত্যাদি রোগে অপরাজিতার মূল, ফুল পাপড়ি, গাছের লতাপাতা, মূলের ছাল ও বীজ ব্যবহার হয়।
প্রাচীন এই ফুলটি ১২ মাস ফুটলেও মূলত এটি বর্ষার ফুল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ফুল এবং এর অন্যান্য উপাদান যেমন মূল, বীজ থেকে উপকার পেতে চাইলে অবশ্যই পরিমাণের ওপর নজর দিতে হবে। এসব উপাদান থেকে তৈরি রস ১/২ চামচ এর বেশি সেবন করা উচিত নয়। কেন না বেশি পরিমাণে রস সেবনে শরীরে বিষের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।