তীব্র তাপপ্রবাহে সবাই কম-বেশি নাজেহাল। এই গরমে অস্থির হয়ে অনেকের মধ্যেই জেকে বসে হিটস্ট্রোকের ভয়। তবে উপসর্গ জানা থাকলে আতংকিত না হয়ে যে কাউকে যেকোনো সময় সহযোগিতা করা সম্ভব।
তীব্র তাপপ্রবাহের ফলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এরই মধ্যে জারি করা হয়েছে হিট অ্যালার্ট। তবুও বিভিন্ন পেশাগত কারণে বাইরে কাজ করা মানুষের মধ্যে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের রোগের উপসর্গ। সব কিছু ছাপিয়ে সারা দেশের হিটস্ট্রোকের সংবাদে অনেকেই ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছেন। তবে গরমে অস্থির হয়ে উঠলেই হিটস্ট্রোকের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।
হিটস্ট্রোকের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে-
প্রচন্ড মাথা ব্যথা শুরু হওয়া;
ঘাম না হওয়া;
শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যাওয়া;
ত্বক শুষ্ক হয়ে উঠা;
বমি বমি ভাব হওয়া;
নাড়িস্পন্দন বেড়ে যাওয়া;
অজ্ঞান হয়ে পড়া তবে এক্ষেত্রে হঠাৎ হঠাৎ বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ কেঁপে উঠতে পারে।
অন্যদিকে ক্লান্তিভাব চলে আসাটা স্বাভাবিক এই তাপদাহে। তবে এই ক্লান্তির জন্য এতটা গুরুতর ভয়ের কিছু নেই। এর উপসর্গ হিসেবে-
মাথা ঘুরাতে পারে;
অতিরিক্ত ঘাম হবে শরীরে;
ঘামের কারণে ত্বক ঠান্ডা এবং চটচটে লাগবে;
শরীরে পেশি সংকোচনও হতে পারে কিছু কিছু ক্ষেত্রে।
এসব লক্ষণ দেখা দিলে, সেই ব্যক্তিকে ঠাণ্ডা জায়গায় সরিয়ে নিতে হবে। সেখানে শুইয়ে দিয়ে, পা দুটো সামান্য উপরে তুলে ধরতে হবে। প্রচুর পানি কিংবা অন্যান্য ধরনের পানীয় খেতে দিতে হবে, যদি তার জ্ঞান থাকে।
এছাড়া রোগীর শরীর যত দ্রুত সম্ভব ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করতে হবে। যেমন, শরীরে ঠান্ডা পানি ছিটিয়ে দেয়া, অথবা স্পঞ্জ দিয়ে গা মুছে দেয়া, একইসঙ্গে বাতাস করাও যেতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব ওই ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে হবে।
ঘাড়ে এবং বগলের নিচে বরফের প্যাকেট রেখে শরীর ঠাণ্ডা করা যেতে পারে এক্ষেত্রে। আধা ঘণ্টার মধ্যে স্বাভাবিক না হলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই সেক্ষেত্রে জরুরি-ভিত্তিতে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
যে কোনো মূর্ছা যাওয়া ব্যক্তির ক্ষেত্রে খেয়াল করতে হবে, যদি তিনি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে তার শরীরে ঘাম নাও হতে পারে। শরীরে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের তাপমাত্রায় হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি সর্বোচ্চ। এসময় মাথা ঝিমঝিম করা, বমি, ক্লান্তি ও দুর্বলতা, মাথাব্যথা, মাংসপেশির খিঁচুনি দেখা দিতে পারে। তাছাড়া রোগী চোখে ঝাপসাও দেখতে পারেন। তাই উপসর্গ দেখে ব্যবস্থা নিলে এবং নির্দেশনা মাফিক চললে বড় ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।