আধুনিক যুগে স্মার্টফোনের ব্যবহার আর শুধু প্রয়োজনেই সীমাবদ্ধ নেই। প্রায় সারাদিনের অধিকাংশ কাজের সাথেই স্মার্টফোন সম্পর্কযুক্ত। তাই ফোনের অধিক ব্যবহারের ফলে, আসক্তিতে রূপ নিচ্ছে মোবাইলের ব্যবহার। জীবনের এক মুহূর্তও মোবাইল ছাড়া ভাবা অসম্ভব মনে হয়। তাই, টয়লেটে থাকাকালেও অনেকে মোবাইল নিয়ে যায়। অনেকের মনে হতে পারে, এই অভ্যাস আহামরি কিছু নয়। তবে ওয়াশরুমে মোবাইল ফোনের দীর্ঘায়িত ব্যবহারে, বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা যেতে পারে।
টয়লেটে বেশি সময়ের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহারে শরীরের ক্ষতি হয়। কারণ, একই ভঙ্গিতে অনেকক্ষণ বসায় সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে, যারা ডিভাইসের উপর কুঁজো হয়ে থাকে। তাদের ঘাড় এবং পিঠে ব্যথার মতো সমস্যা হতে পারে। এছাড়া পেশীর সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এভাবে থাকায় মেরুদণ্ড এবং আশেপাশের পেশীগুলোর উপর চাপ পড়ে। ফলে অস্বস্তি হতে পারে। প্রতিদিন এই একই অভ্যাসের কারণে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
মোবাইল নিয়ে যাওয়ায় সাধারণত মানুষ টয়লেটে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় কাটায়। টয়লেটে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, হেমোরয়েডে অস্বস্তি বাড়ায়। মলত্যাগের সময় স্ট্রেনিং করার ফলে সাধারণত হেমোরয়েডের অসুবিধা বাড়ে। টয়লেটে অত্যধিক সময় ব্যয় করায় মলদ্বারের শিরাগুলোর উপর চাপ বাড়াতে পারে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকায় ব্যথা এবং অস্বস্তিকর অবস্থার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে।
দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকায়, পায়ের রক্ত সঞ্চালনকে ব্যাহত করতে পারে। এতে রক্তনালী স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি হয়। এছাড়া ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস বা রক্তসংবহন সংক্রান্ত সমস্যা দেখা যেতে পারে। টয়লেটে ফোন ব্যবহারের ফলে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার সম্ভাবনা বাড়ে।
টয়লেট সাধারণত অনেক ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণুর আশ্রয়স্থল। সেখানে মোবাইল ব্যবহার করায় এসব অণুজীবের সঙ্গে সংস্পর্শ তৈরি হয়। ফলে রোগ সংক্রমণের পরিবেশ তৈরির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অবশ্য মোবাইল এবং হাত স্যানিটাইজ করলে ঝুঁকি কমতে পারে।
এছাড়া মোবাইল স্ক্রিনের নীল আলো, চোখে চাপ সৃষ্টি করে। টয়লেটের অস্পষ্ট আলো বাথরুমে ফোন ব্যবহার করায় এই প্রভাবকে আরও বেড়ে যায়। আবার ঘুমানোর আগে ডিভাইসের ব্যবহারে মেলাটোনিন কম উৎপন্ন হয়। তাই রাতে ঘুমানোর আগে টয়লেট ব্যবহারের সময় ফোন ব্যবহার করা ত্যাগ করতে হবে। নয়তো পর্যাপ্ত ঘুমের ঘাটতি তৈরি হবে।