ছেলে সন্তানের প্রতি আগ্রহ থেকে গর্ভাবস্থায় মেয়ে সন্তানের ভ্রুণ নষ্ট করার প্রবণতা রয়েছে। বর্তমানে ৬ শতাংশ মানুষ গর্ভের সন্তান নষ্ট করছেন।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁও সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের কার্নিভাল হলে ‘পক্ষপাতমূলক লিঙ্গ নির্ধারণের ঝুঁকি’ শীর্ষক এক আলোচনায় এসব তথ্য উঠে আসে। আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক মো. মাইনুল ইসলাম।
জরিপের তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে ১৮ শতাংশ নারী ছেলে সন্তান চান। ১২ শতাংশ নারী চেয়েছেন মেয়ে সন্তান। ৪০ শতাংশ মানুষ ছেলে না মেয়ে সন্তান হবে, তার আগাম পরীক্ষা করছেন। আর ৬ শতাংশ মানুষ সন্তান নেয়ার ক্ষেত্রে মেয়ে ভ্রুণ নষ্ট করছেন। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার ফলে এর প্রভাবও পড়েছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ছেলে সন্তানের চাইতে মেয়ে সন্তানের ভ্রুণ নষ্ট করার প্রবণতা বেশি। সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি করে তা কমিয়ে আনতে হবে।
গর্ভের সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণের পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন,
সন্তান ছেলে না মেয়ে, তা নির্ধারণের পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। যারা এই কাজে নিয়োজিত আছেন তাদের উচিত বাবা-মাকে আগাম সন্তানের তথ্য না দেয়া। এক্ষেত্রে সন্তানের ওপর ভায়োলেন্স কমে আসবে। কেননা, বেশিরভাগ ভায়োলেন্স হয় সন্তানের তথ্য আগাম পেয়ে যাওয়ার ফলে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১০০ নারী সন্তানের তুলনায় বর্তমানে ১০৫ জন পুরুষ জন্মগ্রহণ করছে। ক্ষেত্রবিশেষে কোনো কোনো দেশে বা স্থানে তা আরও বেশি। ১১০, ১১৩ জনে গিয়ে ঠেকেছে।
এ অবস্থায় মেয়ে সন্তানের ভ্রুণ নষ্টের হার কমিয়ে আনার দাবি জানিয়ে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, বিশ্বব্যাপী নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি এখন প্রতিষ্ঠিত। আমাদের দেশও নারী ক্ষমতায়নে এগিয়েছে অনেকদূর। দেশে নারীর কর্মসংস্থান বেড়েছে। তাই সন্তান নষ্ট করার প্রবণতা কমাতে হবে। সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. রাশেদা সুলতানা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আহমেদুল কবীর ও অন্যান্যরা।