পিরিয়ডের সময় নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় নারীদের। এ সময় বিরক্তি, মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা হয়। তবে এই ব্যথা সহ্য করা একেক সময় খুব কঠিন হয়ে পড়ে। শুধু পেটে নয়, শরীরের অনেক জায়গায় ব্যথা হয়। এই কারণে অনেক নারী পিরিয়ডের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ওষুধের আশ্রয় নেন। তবে কখনো কখনো এটি শরীরের ক্ষতি করতে পারে। কেউ যদি ওষুধ খাওয়া এড়াতে চায়, তবে এই ঘরোয়া টোটকাগুলো গ্রহণ করতে পারেন।
হিটিং প্যাড ও হট ব্যাগ
পিরিয়ডের সময় হিটিং প্যাড বা হট ব্যাগ জরায়ুর পেশীর খিঁচুনি কমিয়ে দিতে পারে। আর পিঠের ব্যথা কমাতে নিচের অংশে ব্যবহার করতে পারেন একটি হিটিং প্যাড। বিশেষজ্ঞদের মতে, গরম পানি দিয়ে গোসল করা বা গরম পানি খেলেও পিরিয়ডের সময় আরাম পাওয়া যায়।
ভেষজ চা
পিরিয়ডের সময় ভেষজ চা খাওয়া খুব ভালো। বিশেষজ্ঞদের মতে, গোলমরিচের সঙ্গে দুধ ছাড়া আদা চা পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে কার্যকর বলে মনে করা হয়। তবে এটি শুধুমাত্র পিরিয়ডের ব্যথাই কমায় না, অনিয়মিত পিরিয়ডের অস্বস্তির পাশাপাশি প্রিমেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোমের সঙ্গে জড়িত ক্লান্তি দূর করতেও সাহায্য করে। এছাড়াও ক্যামোমাইল চা যা প্রস্টাগ্ল্যান্ডিনের উৎপাদন হ্রাস করে তা পিরিয়ডের সময় উপকারি বলে বিবেচিত।
চায়ের সঙ্গে বা অনেকরকম রান্নায় আদা আমরা নিয়মিতই খাই। এই ভেষজটিতে রয়েছে অবাক করা কিছু ঔষধি গুণ। এটি পাচনতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে, বমি বমি ভাব কমায়।
তেল দিয়ে ম্যাসাজ
আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতি বলছে, নারকেল বা তিলের তেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য এবং লিনোলিক অ্যাসিড রয়েছে। পিরিয়ডের সময় তলপেটে নারকেল বা তিলের তেল দিয়ে মালিশ করলে মাংসপেশির খিঁচুনি কমে যায়। ব্যথা উপশম হয়। ফলে এটিও পিরিয়ডের সময় উপকারি বলে বিবেচিত।
চর্বিযুক্ত খাবার, অ্যালকোহল, ক্যাফিন
পিরিয়ডের সময় বেশি ভাজা-মশলাদার খাবার, অ্যালকোহল, ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় খেলে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা এবং পেট ফুলে যেতে পারে। তাই পিরিয়ডের সময় লবণাক্ত খাবার, অ্যালকোহল, ক্যাফেইন, কার্বনেটেড পানীয় ইত্যাদি পরিহার করতে হবে।
হালকা ব্যায়াম
অত্যাধিক ব্যথার কারণে নারীরা পিরিয়ডের সময় ব্যায়াম এড়িয়ে চলে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে হালকা ব্যায়াম যেমন- যোগ ব্যায়াম, হাঁটাহাঁটি ইত্যাদি করলে ব্যথা উপশম হয়। তবে এই সময়ে ভারি কাজ এড়িয়ে চলা উচিত। ব্যায়াম করলে এন্ডোরফিন বের হয়, যা ক্র্যাম্পের জন্য প্রাকৃতিক ব্যথা উপশমকারী হিসেবে কাজ করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুম থেকে উঠে হালকা ব্যায়াম করলে শরীরের ম্যাজম্যাজ ভাব কেটে যায়। শরীরে রক্ত চলাচল ঠিক রাখতেও সকালের ব্যায়াম খুব গুরুত্বপূর্ণ।