চোখে সমস্যা না থাকলেও বর্তমানে ফ্যাশনের জন্য বা সুন্দর দেখানোর জন্য অনেকেই লেন্স পড়ে থাকেন। কেউ এক বার পরেই লেন্স বদলে ফেলেন, কেউ আবার দীর্ঘ দিন একটাই লেন্স ব্যবহার করে থাকেন। তবে দীর্ঘক্ষণ কন্ট্যাক্ট লেন্স পড়া থাকলে চোখে কোনও পরজীবী বাসা বাঁধতে পারে। আর তা ছড়িয়ে পড়লে কর্নিয়াল আলসারের আশঙ্কা তৈরি হয়।
অনেকে না জেনে বুঝেই চোখে লেন্স পড়া শুরু করেন। তার উপর লেন্স নিয়েই ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে চোখে সংক্রমণ হওয়ার প্রবণতা ১০ গুণ বেড়ে যায়। চোখ লাল হওয়া, চোখে তীব্র যন্ত্রণা, অস্বস্তি, অনবরত চোখ থেকে জল বেরোনো— এই সব উপসর্গই চোখে সংক্রমণ হওয়ার লক্ষণ হতে পারে।
নিয়ম মেনে লেন্স না পড়লে চোখে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। তাই লেন্স পরার কিছু নিয়ম আছে, তা আগে থেকেই জেনে রাখা উচিত,
১) কাজের প্রয়োজনে দীর্ঘক্ষণ বাড়ির বাইরে সময় কাটাতে হয় অনেককেই। সে ক্ষেত্রে একটানা কতক্ষণ লেন্স পরবেন, সে বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বেশিসময় ধরে লেন্স ব্যবহার না করাই ভালো।
২) লেন্সের পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। তিন মাস অন্তর লেন্স রাখার পাত্রটি বদলাতে হবে। কনট্যাক্ট লেন্স সব সময়ে স্টেরাইল সলিউশনে ভিজিয়ে সঠিক লেন্স কেসে রাখবেন। লেন্স পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ভীষণ জরুরি।
৩) চোখে কোনও রকম অস্বস্তি হলে সঙ্গে সঙ্গে লেন্স খুলে ফেলুন। কিছু দিন লেন্স পরা বন্ধ রাখলে ভাল হয়।
৪) বাজারে হরেক দামের লেন্স পাওয়া যায়। অনেক সময়ে কম দামি লেন্স দীর্ঘ দিন ব্যবহারের কারণেও সংক্রমণ হয়। দামি লেন্সের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে। মেয়াদ পেরিয়ে গেলে সেই লেন্স যত দামিই হোক না কেন, ভুলেও ব্যবহার করবেন না।
৫) দীর্ঘসময় স্ক্রিনের সামনে থাকলে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়। তারপর লেন্স পরলে চোখে সমস্যা হয়। এ রকম ক্ষেত্রে লেন্স কম পরাই ভাল। লেন্স পরার আগে ও পরে হাত ভাল করে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে ভুলবেন না। তোয়ালে দিয়ে হাত মুছবেন না। বরং কোনও মসলিন কাপড়ে বা সুতির রুমালে হাত মুছে, তবেই লেন্সে হাত দেবেন।
৬) কনট্যাক্ট লেন্স পরে ভুলেও সাঁতার কাটবেন না। সমুদ্রের পানিতে যাওয়ার আগে কিংবা সুইমিং পুলে গেলে, লেন্স খুলে তার পর পানিতে নামুন। লেন্স পরে মুখে পানির ঝাপটা দিলেও সমস্যা হবে।
৭) মেকআপ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে তার পরেই লেন্স পরুন। লেন্স পরে মেকআপ করলে অনেক সময়ে তাতে কাজল, মাস্কারা, আইশ্যাডো লেগে যেতে পারে। এমন ঘটলে চোখে প্রাথমিক জ্বালাভাব তো হবেই, এমনকি, সংক্রমণও হতে পারে।