রোজা রেখে শরীরচর্চা

0
49
রোজা রেখে শরীরচর্চা
ছবি: প্রতীকী

সুস্থ দেহ ও প্রফুল্ল মনের জন্য শরীরচর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেহের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়ার জন্য শরীরচর্চা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ও শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে শরীরচর্চার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। রোজার সময় দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকতে হয়। এ সময় শরীরচর্চা স্বাস্থ্যসম্মত কিনা এ বিষয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন তৈরি হতে পারে বিধায় এই আলোচনা। রোজা এবং শরীরচর্চা দুটোই একসঙ্গে চলতে পারে। তবে রোযা রেখে শরীরচর্চা করতে গেলে কতিপয় বিষয়ের উপর অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

সুফল : না খেয়ে হাঁটতে থাকলে শরীরের চর্বি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে যা প্রকারান্তরে ওজন কমাতে সাহায্য করে। শরীরের ওজনকে বাগে রাখার জন্য রোজা রেখে শরীরচর্চার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এই সময়ে সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। শরীরচর্চার ফলে মস্তিষ্ক, স্নায়ু কোষ এবং পেশিকোষগুলো সতেজ থাকে। এ কারণে রোজা রেখে শরীরচর্চা করলে শরীরে বাড়তি কিছু ইতিবাচক সুফল পাওয়া যায়। যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করছেন নেহায়েৎ রোজার কারণে এটি ছেড়ে দেয়া মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত হবে না।

কখন শরীরচর্চা করবেন : রোজার সময় তারাবি নামাজের পরে শরীরচর্চা সবচেয়ে উত্তম। এছাড়া ইফতারের পরে ও শরীরচর্চা করা যেতে পারে। যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কিংবা ইনসুলিন গ্রহণ করছেন তাদের ক্ষেত্রে ইফতারের পূর্বে শরীরচর্চা না করাই উত্তম। তবে সুস্থ সবল মানুষের জন্য ইফতারের পূর্বে শরীরচর্চা করার ক্ষেত্রে কোন বাধা নেই। সময়, সুযোগ ও পরিবেশ থাকলে সেহ্রির পূর্বেও শরীরচর্চা করা যেতে পারে।

কোন ধরনের শরীরচর্চা উত্তম: রোজা রেখে হালকা ও মাঝারি মাত্রার শরীরচর্চা করা যেতে পারে। হাঁটা, ধীরগতিতে জগিং করা, ওজন উত্তোলন করা, সাঁতার কাটা, সাইক্লিং এর মতো মৃদু মাত্রার ব্যায়াম করতে কোন বাধা নেই। যে সমস্ত শরীর চর্চায় হৃদস্পন্দনের গতি মিনিটে ১৫০ এর বেশি হয় সে ধরনের শরীরচর্চা রোজা রেখে করা অনুচিত। পেশিশক্তি বর্ধক ব্যায়াম রোজার সময় বেশি উপযোগী। রিচ আপ, পুশ আপ, ওজন উত্তোলন, জায়গায় দাঁড়িয়ে উঠ-বস করা এ সমস্ত ব্যায়ামের পর্যায়ে পড়ে।

লক্ষণীয় বিষয় : গরমের সময় শরীরচর্চা করলে যথেষ্ট পরিমাণ পানি ও লবণ ঘাটতি হতে পারে। পানি শূন্যতা সৃষ্টি হলে শরীরের জন্য তা হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। সেজন্য পানিশূন্যতা যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। পানির ঘাটতি পূরণের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পানির উৎস শুধুমাত্র ট্যাপের পানি নয়। ফলমূল পানির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। কমলা, আঙ্গুর, মালটা, টমেটো, শশা ইত্যাদি পানির অন্যতম উৎস। খাদ্যতালিকায় এ সমস্ত ফলমূল অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

ইফতারের পর থেকে সেহ্রির পূর্ব পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পান করে শরীরে যথেষ্ট পানি ধরে রাখতে হবে। মিহি শর্করা জাতীয় খাদ্যের তুলনায় তন্তু জাতীয় শর্করা খাদ্য গ্রহণ করার দিকে বেশি নজর দিতে হবে। আর খাদ্যতালিকায় অবশ্যই আমিষের যোগান থাকতে হবে।