রোগীদের বিদেশ যাওয়া রোধে কাজ করছে পিএইচএ

0
72

প্ল্যানেটারি হেলথ একাডেমিয়ার (পিএইচএ) চেয়ারপারসন ও ট্রাস্টি ডা. তাসবিরুল ইসলাম বলেছেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে পিএইচএ। রোগীরা যাতে দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য না যান, তা রোধ করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। আমরা যদি আন্তর্জাতিক মানের সব স্বাস্থ্য সেবা দেশেই দিতে পারি, তাহলে সেই সব রোগীদের আর দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। সেজন্য আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশ্বমানের করে গড়ে তুলতে চাই।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে ‘পিএইচএ গ্লোবাল সামিট-২০২৪’র ৬ষ্ঠ দিনের বিভিন্ন সেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

ডা. তাসবিরুল ইসলাম বলেন, করোনাকালীন সময়ে ২০২০ সালে মাত্র ৫ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে আমাদের এই প্লাটফর্মের (পিএইচএ) যাত্রা শুরু হয়। মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন বছরে এই প্লাটফর্মে দুই হাজারের অধিক প্রবাসী চিকিৎসক যুক্ত হয়েছেন। এখন পিএইচএ বাংলাদেশি ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত চিকিৎসক, গবেষক এবং শিক্ষাবিদদের সবচেয়ে বড় স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসা সংগঠন।

তিনি জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১০ থেকে ১৫ হাজার বাংলাদেশি চিকিৎসক সগৌরবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদেরও এই প্লাটফর্মে যুক্ত করার চেষ্টা করছে পিএইচএ।

ডা. তাসবিরুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে আমাদের কাজ চলছে। স্বাস্থ্যসেবার মান আরও উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কাজ করছি। আমরা আশা করছি, আমরা যে কাজটি করতে চাচ্ছি, তা সম্ভব করতে পারব।

তিনি বলেন, আমার চাই আমাদের সেবা পুরোপুরি প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে। সেজন্য আমরা দেশের মধ্যে প্রথম প্রোগ্রামটি সিলেট থেকে শুরু করি। সেখানে আমার অভূতপূর্ব সাড়া পাই, যা আমাদের অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করেছে। এরপর আমরা এই নয়দিনের সম্মেলন আয়োজনের সাহস করেছি। সম্মেলনে দুই হাজারেরও বেশি চিকিৎসক, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও মেডিক্যাল শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এর মাধ্যমে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের চিকিৎসকদের মধ্যে একটি টেকসই সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস।

এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া নয়দিনের এই সামিটের ৬ষ্ঠ দিনে শনিবার সকাল থেকে বিভিন্ন ভেন্যুতে বৈজ্ঞানিক সেশন শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত । এদিন নয়টি সেশন পরিচালিত হয়। এর মধ্যে ঢাকা ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে গ্র্যান্ড বলরুমে সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে ‘নেফ্রোলজি’ বিষয় সেশন হয়।

পাশাপাশি হল-১ এ ‘পিএইচএ পালমোনারি’ ও ‘নিউরো সায়েন্স’ হল-২ ‘পিএইচএ গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি’ ও ‘হেপাটোলজি’, হল -৩ এ ‘কার্ডিও, সিটি, ভাসকুলার সার্জারি’ ভাসকুলার সার্জারি, হল -৪ এ ‘ অবসটেট্রিক্স অ্যান্ড গাইনোকোলজি’ বিষয়ের উপর সেশন পরিচালিত হয়। এ ছাড়া ঢাকা ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারের বাহিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে(বিএসএমএমইউ) ‘কলোরেক্টাল সার্জারি হ্যান্ডস অন কোর্স’ চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত। সব সেশন পরিচালনা করেন দেশি ও প্রবাসী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

সম্মেলনের মূল পর্বের আকর্ষণ ছিল কী-নোট প্রেজেন্টেশন। ‘করোনারি ডিজিজ ইন উইমেন’ শিরোনামে কী-নোট প্রেজেন্টেশন দেন ওয়ার্ল্ড হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ডা. জগৎ নরুলা। ‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার’ শিরোনামে কী-নোট প্রেজেন্টেশন দেন লন্ডনের রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানসের প্রেসিডেন্ট ডা. সারাহ ক্লার্ক এবং উইমেনস হেলথ-নাউ অ্যান্ড ইউ ফিউচার শিরোনামে কি-নোট প্রেজেন্টেশন লন্ডনের সেন্ট জজ ইউনিভার্সিটির অনারারি সিনিয়র লেকচারার ডা. রানী ঠাকার। এছাড়া আরও বক্তব্য দেন পিএইচএ ট্রাস্টি ডা. নাসের খান, ডা. বাশার এম আতিকুজ্জামান, ডা. মো. জাকের উল্লাহ, ডা. চৌধুরী এইচ আহসান, ডা. শাকিল ফরিদ ও ওমর শরিফসহ অন্যান্যরা।

দেশে এই প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হচ্ছে পিএইচএ গ্লোবাল সামিট ২০২৪। এ ধরনের সম্মেলন শুধু বাংলাদেশেই নয়; দক্ষিণ এশিয়ায় এই প্রথম। সম্মেলনে স্পিকার হিসেবে রয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ৫০ জন চিকিৎসা বিজ্ঞানী এবং দেশের ১০০ জনেরও অধিক খ্যাতিমান চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ। নয় দিনের সম্মেলনে থাকছে ৩০টির বেশি কোর্স এবং সাইন্টিফিক সেশন।