অন্যের মন জুগিয়ে চলেন? জানুন নেতিবাচক দিক

0
199

আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা সব সময় অন্যের মন জুগিয়ে চলেন। অনেকে আবার কেউ না বলে দেওয়া পর্যন্ত বুঝতেও পারে না যে তাদের এই প্রবণতা রয়েছে। তাদের নিজের খরচে অন্যের চাহিদা এবং আকাঙ্ক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রবণতা থাকে। তারা মনে করে এটি একটি গুণ, কিন্তু এর বিভিন্ন নেতিবাচক ফল রয়েছে যা একজন ব্যক্তির জীবনের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করতে পারে।

১. সম্পর্কে টানাটানি তৈরি হয়

মানুষকে আনন্দ দেওয়ার পেছনে উদ্দেশ্য হলো ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলা। কিন্তু অন্যদেরকে খুশি রাখার সার্বক্ষণিক চেষ্টা সম্পর্কের ক্ষেত্রে টানাটানি তৈরি করতে পারে। যাকে খুশি রেখে চলা হয়, সে এই অভ্যাসকে তার প্রাপ্য মনে করে। যে কারণে একটা সময় তা অপরজনের জন্য চাপ হিসেবে তৈরি হয়। কারণ, কোনো সম্পর্কই একজনের পক্ষে টেনে নেওয়া সম্ভব নয়। যারা অন্যের মন জুগিয়ে চলে, তারা অন্যকে খুশি রাখার জন্য কোনোকিছুতে ‌‌‘না’ বলতে পারে না। কিন্তু পরবর্তীতে তা তাদের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

 

২. আত্মসম্মান কমে যায়

সবকিছুতে অন্যদের কাছ থেকে অনুমোদন এবং বৈধতা চাওয়ার অভ্যাস আত্ম-সম্মানে প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যের মন জুগিয়ে চলা মানুষেরা কখনো নিজের মনের কথা শুনে চলতে পারে না। অন্যের মতামতই তাদের মতামত। যে কারণে কমতে থাকে আত্মসম্মান। অন্যের প্রত্যাশা পূরণের ক্রমাগত প্রচেষ্টা মানুষকে অবমূল্যায়িত করে এবং এটি তাদের সামগ্রিক আত্মসম্মানের ওপর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

৩. ক্লান্তি দেখা দেয়

অন্যের চাহিদা মেটানোর নিরলস প্রচেষ্টার ফলে ক্লান্তি এবং হতাশা দেখা দিতে পারে। অন্যের মন জুগিয়ে চলা মানুষেরা নিজেদের সামর্থ্যের বাইরে গিয়েও অন্যের জন্য কাজ করে। তারা নিজেদের মঙ্গলের কথা চিন্তা না করেই অসংখ্য প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করে। অন্যদের হতাশ করার ক্রমাগত ভয় দীর্ঘস্থায়ী চাপ, ক্লান্তি এবং মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য নষ্ট করতে পারে।

৪. সম্পর্কে বাউন্ডারি রাখতে জানে না

অন্যের মন জুগিয়ে চলা মানুষেরা সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাউন্ডারি রাখতে জানে না, কারণ অন্যদের হতাশ করার ভয় তাদের নিজস্ব চাহিদাকে ছাড়িয়ে যায়। এ কারণে একটা সময় তা তার জন্য শোষণের কারণ হতে পারে, অন্যরা তাদের মানিয়ে চলা স্বভাবের সুযোগ নেয়, তাদেরকে বিনা অপরাধেই দোষী বানিয়ে রাখে।

৫. ক্যারিয়ারের প্রভাব

কর্মক্ষেত্রেও আপনার আচরণ একই হলে নিজেকে তুলে ধরতে, মতামত প্রকাশ করতে এবং ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আলোচনা করতে বাধা আসতে পারে। যা আপনার পেশাদার বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে। সহকর্মী এবং ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা এ ধরনের স্বভাবকে নেতৃত্বের গুণাবলীর অভাব হিসাবে বিবেচনা করতে পারে, যা ক্যারিয়ারের অগ্রগতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।