সিওপিডিতে বছরে ৩০ লাখ মৃত্যু, ধূমপান রোধেই প্রতিরোধ

0
265

শ্বাসতন্ত্রের জটিল রোগ ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমানারি ডিজিজে (সিওপিডি) প্রতি বছর বিশ্বে কমপক্ষে ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় এবং কমপক্ষে ৩০ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়। তবে ধূমপানে মানুষকে নিরুৎসাহিত করার মাধ্যমে শ্বাসতন্ত্রের এই জটিল রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) বিশ্ব সিওপিডি দিবস উপলক্ষ্যে বিএসএমএমইউয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অথিতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, শ্বাসতন্ত্রের জটিল রোগ ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমানারি ডিজিজ সিওপিডি। অসংক্রামক রোগগুলোর মধ্যেও সিওপিডি একটি অন্যতম শীর্ষস্থানীয় রোগ। পৃথিবীব্যাপী মৃত্যুর সকল কারণের মধ্যে এই রোগটির অবস্থান তৃতীয়। তাই ভয়ংকর এই রোগ সম্পর্কে আমাদের ভালোভাবে জানতে হবে এবং প্রতিরোধে সচেষ্ট হতে হবে।

তিনি বলেন, ধূমপানই সিওপিডির প্রধানতম কারণ। তাই ধূমপান পরিহার ও দুষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে সিওপিডি রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে শ্বাসতন্ত্রকে বাঁচাতে আমাদের প্রতিনিয়ত অবশ্যই মুখে মাস্ক পড়তে হবে। একইসঙ্গে কলকারখানা ধোঁয়াসহ সব ধরনের ধোঁয়া থেকে দূরে থাকা, তামাক চাষ বন্ধ করা এবং তামাক জাতীয় দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে সিওপিডিও রোগ অনেকটাই বিনাস করা সম্ভব।

উপাচার্য আরও বলেন, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এই রোগে ভোগা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর এই রোগে বিশ্বে কমপক্ষে ৩০ লাখ মানুষ মারা যায় এবং কমপক্ষে ৩০ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়। তবে অভ্যন্তরীণ বায়ু দূষণ হ্রাস করা, জৈব জ্বালানির ক্ষতিকর দিক থেকে মানুষকে রক্ষা করা এবং ধূমপানে মানুষকে নিরুৎসাহিত করার মাধ্যমে এই রোগটি সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) ও বক্ষব্যাধি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন বলেন, এই রোগে দীর্ঘমেয়াদি কাশি, কফ নিঃসরণ ও শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে প্রছন্ন হয়ে উঠে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সমস্যাগুলো প্রকট হয় এবং একসময় এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে তখন রোগী নিজের দৈনন্দিন কাজকর্ম করতেও শ্বাসকষ্টে ভোগেন। একই সঙ্গে দানা বাঁধে সিওপিডি জনিত অন্যান্য জটিলতা যেমন হৃদরোগ, মাংসপেশির দুর্বলতা, ওজন হ্রাস, বিষন্নতা, ফুসফুসের ক্যান্সার ইত্যাদি নানা ধরনের সমস্যা।

তিনি বলেন, রোগ প্রতিরোধে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। সিওপিডি থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য আগেভাগেই গুরুত্ব দিতে হবে। এখনই ধূমপান প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। আগে ভাগে এই রোগটি চিহ্নিত এবং চিকিৎসা শুরু করতে পারলে এ রোগের কারণে স্বাস্থ্যখাতের ওপর যে বাড়তি চাপের সৃষ্টি হয়েছে তা দূর হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, বক্ষব্যাধি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাজাশীষ চক্রবর্তী, সহযোগী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলাম প্রমুখসহ বক্ষব্যাধি বিভাগের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, চিকিৎসক, রেসিডেন্ট শিক্ষার্থীরা।