সবসময় মাথা ভারী হয়ে থাকছে? কিন্তু কাজকে গুরুত্ব দিয়ে শরীরের বিষয়টি একেবারেই পাত্তা দিচ্ছেন না। এতে বিপদ ঘটতে পারে। সময় থাকতে কেন এমন হচ্ছে, কীভাবে চিকিৎসা নিতে হবে বিষয়গুলো ভাবা দরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাথা সবসময় ভারী হয়ে থাকলে এটি ব্রেন স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ। তাই দেরি না করে সময় থাকতে সচেতন হতে হবে।
ব্রেন স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিশেজ্ঞরা বলছেন কিছু সাধারণ লক্ষণের কথা। যা দেখে আপনি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
১. হঠাৎ দুর্বলতা:
হঠাৎ করে মুখ, হাত এবং পায়ের মতো শরীরের একটি অংশে দুর্বলতা, অসাড়তা বা পক্ষাঘাতের মতো সমস্যা দেখা দেয় তবে এর মানে হল ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে। অবিলম্বে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।
২. দৃষ্টিশক্তি কমে আসা:
ব্রেন স্ট্রোকের আগে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেতে থাকে। চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে আসবে। আপনি হঠাৎ ঝাপসা দেখবেন।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ব্রেন স্ট্রোকের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগীর সময়মতো চিকিৎসা পেলে বাঁচানো যায়। তবে ব্রেন স্ট্রোক শুরু হওয়ার পর প্রথম ৪-৫ ঘন্টার মধ্যে যদি চিকিৎসা দেয়া হয় তবে অনেকাংশে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাথা ভারী ছাড়াও প্রতিদিনই অনেকের মাথা ব্যথা থাকে। এর পেছনেও থাকতে পারে গুরুতর কারণ-
বছরে একবার দুইবার মাথা ব্যথা হলে তেমন কোনও সমস্যার আশঙ্কা নেই। তবে মাঝেমাঝে মাথা ব্যথা, নিয়মিত মাথায় ব্যথা হলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। কারণ এর পিছনে গুরুতর কোনও ইঙ্গিত থাকলেও থাকতে পারে।
১. টেনশন:
মাথার পিছনের দিকে হয় টেনশন হেডেক। এক্ষেত্রে ঘাড়ের সামান্য উপরে ব্যথা করে। প্রথমে মাথার এই অংশটি ভারী হয়ে যায়। তারপর ব্যথা হতে শুরু করে। কাঁধ এবং গলা শক্ত হয়ে যাওয়াও এই সমস্যার অন্যতম লক্ষণ। আবার অনেকসময় এই টেনশন হেডেক কপালে শুরু হয়। সেক্ষেত্রে চোখেও এই সমস্যা শুরু হয়।
২. চোখের সমস্যা:
চোখের সমস্যা হলে সেই উপসর্গ কেবল চোখেই আটকে থাকে না। চোখের পাশাপাশি মাথা ব্যথাও হতে পারে অন্যতম কারণ। এক্ষেত্রে মাথার সামনের দিকে, আরও নির্দিষ্ট করে বললে কপালে ব্যথা হয়। একটু রেস্ট নিলে করলে এই ব্যথা কমে যায়।
৩. সাইনাস:
সাইনাস হলো মাথার ভিতর থাকা ছোট ছোট বায়ুভর্তি কুঠুরি। এই বায়ু ভর্তি কুঠুরি মাথা হালকা রাখতে সাহায্য করে। তবে কোনও সংক্রমণের কারণে মাথার ভিতরের এই অংশে তৈরি হয় সমস্যা। সেক্ষেত্রে এই কুঠুরিতে প্রদাহ তৈরি হয়। তখন তীব্র মাথা ব্যথা হয়ে থাকে।
৪. মাইগ্রেন:
মাইগ্রেনের ব্যথা মাথার একটি নির্দিষ্ট অংশে হতে পারে। আবার সেই ব্যথা মাথা ছাড়িয়ে চোখেও চলে আসতে পারে। তবে এই ব্যথা মানুষ ভেদে আলাদা হয়। এবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাইগ্রেনের ব্যথার পিছনে কিছু ট্রিগার ফ্যাক্টর থাকতে পারে। এক্ষেত্রে আলো, শব্দ, গন্ধ সহ বিভিন্ন কারণে মাথায় এমন ব্যথা হয়।
কখন যাবেন ডাক্তারের কাছে?
মাথা ব্যথা কম-বেশি সবার হয়। কী ছোট আর বড়। কারও হয় তীব্র, অসহনীয়। কারও মৃদু। এসব ব্যথাকে বেশিরভাগ মানুষই আমলে নেন না। বাজারের ওষুধ খেয়ে বা মলম লাগিয়ে অনেক ব্যথার উপশম করেন। কিন্তু প্রথমবারই যদি মারাত্মক মাথার যন্ত্রণা হয় তাহলে তখনই ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। মাথা ব্যথার সঙ্গে জ্বর, বমি হলে ইনফেকশন, মেনিনজাইটিস, মাথার ভিতরে রক্তপাতের লক্ষণ হতে পারে।
মাথাব্যথার সঙ্গে নিউরোর সমস্যা দেখা দিলে অর্থাৎ হাত-পায়ে সাড় চলে গেলে, কোনও একদিকে প্যারালাইসিসের লক্ষণ দেখা দিলে সাবধান। ঝিমিয়ে গেলে, চেনা মানুষকে চিনতে না পারলে দ্রুত নিউরোলজিস্টের কাছে যান।