গরমকালে সবারই কম-বেশি ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। তাই বিষয়টি নিয়ে কেউ তেমন একটা ভাবেনও না। চিকিৎসা বিজ্ঞানও বলছে, ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে স্বাভাবিক মাত্রায় ঘাম হওয়া চিন্তার কোনো বিষয় না হলেও, অতিরিক্ত ঘাম হলে অবশ্যই তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
অনেকেরই অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থাকে। অতিরিক্ত ঘাম হওয়া শারীরিক বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হতে পারে। আর ঘাম হলে শরীরের অতিরিক্ত পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। ফলে শরীরের তাপমাত্রা নেমে যায়।
এমন অনেকেই আছেন যাদের মুখ ও শরীরের তুলনায় হাতের তালুতে বা পায়ের পাতায় ঘাম বেশি হয়। একে বলে হাইপার হাইড্রোসিস। আবার ঘাম না হওয়াও কখনো বড় ধরনের অসুস্থতার লক্ষণ।
তাই অতিরিক্ত ঘামও যেমন শারীরিক কিছু রোগের লক্ষণ, আবার না ঘামলেও শরীরে থাকতে পারে নানা অসুখ। আর গরম ছাড়াই যদি আপনি ঘামেন তাহলে বুঝতে হবে, তা বড় কোনো রোগের লক্ষণ।
কেন অতিরিক্ত ঘাম হয়?
অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে, নার্ভাস হলে কিংবা রোদে গেলে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে। অনেকের আবার মানসিক চাপ থেকেও বেশি ঘাম হতে পারে। অনেক সময় খাবারের কারণেও অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে। যেমন- মসলাযুক্ত, ঝাল বা তৈলাক্ত খাবার অতিরিক্ত খেলেও বেশি ঘাম হতে পারে।
ব্রোকোলি, পেঁয়াজ, অতিরিক্ত লবণ অর্থাৎ আয়োডিনযুক্ত খাবার খেলেও ঘাম বেশি হতে পারে। অনেকের আবার শারীরিক দুর্বলতার কারণে ঘাম বেশি হয়। ঘাম না হওয়ার জন্য পাউডার ব্যবহার করলেও অনেকের উল্টো ফল হয়। তখন ঘাম কম হওয়ার পরিবর্তে আরও বেশি ঘাম হয়। আবার অতিরিক্ত ধূমপানের কারণেও ঘাম বেশি হতে পারে।
অতিরিক্ত ঘাম হলে করণীয়:
স্বাভাবিক ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, বাই কার্বোনেট বেরিয়ে যায়। আর অতিরিক্ত ঘাম হলে এগুলো বেশি পরিমাণে বের হয়ে যায়, ফলে শরীর দুর্বল ও অস্থির হয়ে পড়ে। এ সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে লেবুর শরবত খেতে পারেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে শরবতে চিনির পরিমাণ যেন খুব বেশি না হয়। তাহলে যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে, তাদের ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত গরমে দইয়ের ঘোল ও ডাবের পানি খেতে পারেন।
অনেকে অতিরিক্ত গরমে কোল্ড ড্রিংকস খেয়ে থাকেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই বিশেষজ্ঞরা কোল্ড ড্রিংকসের পরিবর্তে টাটকা ফলের রস খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ভিটামিন বি-১২ এর অভাবে যেহেতু হাইপার হাইড্রোসিস হয়, তাই বি-কমপ্লেক্সযুক্ত খাবার খাওয়ারও পরামর্শ দেন তারা।
সেই সঙ্গে অতিরিক্ত ঘাম হলে একবার রক্ত পরীক্ষা করে থাইরয়েড হয়েছে কি না, সেটিও জেনে নেয়ার কথা বলেন তারা।