ভ্যাপসা গরম অনেকেরই মাথাব্যথার প্রধান কারণ। বাড়ির বাইরে সূর্যের তাপের সংস্পর্শে এ সমস্যা আরও জটিল হয়ে ওঠে। যদি অতিরিক্ত গরমে প্রায়ই মাথাব্যথা সমস্যায় ভোগেন তবে আজকের আয়োজন আপনারই জন্য।
অতিরিক্ত গরমে মাথাব্যথা সমস্যা দেখে দিলে তা স্বাভাবিক কাজকর্মে অনেকটাই বাধার সৃষ্টি করে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই পেইন কিলার খেয়ে দ্রুত এই ব্যথা নিরাময় করতে পারলেও আপনার এতে দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
তাই বাইরে অফিসের কাজে বা বাড়ির ব্যক্তিগত কাজে কিংবা পড়াশোনার জন্য কোচিং বা স্কুল-কলেজে যাতায়াতের পর মাথাব্যথার সমস্যায় ভুগলে তা থেকে রক্ষা পেতে কিছু বিষয় অবশ্যই মেনে চলতে পারেন। এগুলো হলো:
১. সরাসরি গরমের তাপ ও সূর্যরশ্মি এড়াতে ব্যবহার করুন ছাতা ও রোদচশমা।
২. খাবারের তালিকায় রিচ ফুড, ফাস্টফুড, তেল-মসলাযুক্ত খাবার ও বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন।
৩. গরমে হজম প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই এ সময় পেটে গ্যাস, বুক জ্বালা পোড়া ও অ্যাসিডিটির সমস্যা বেশি দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেটে গ্যাস জমার কারণেও মাথাব্যথার সৃষ্টি হয়। এ সমস্যা এড়াতে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার পাশাপাশি দৈনিক তিন লিটার পানি পান করার চেষ্টা করুন।
৪. হঠাৎ মাথাব্যথার উপদ্রব থেকে বাড়িয়ে দিন তরল পানীয়র পরিমাণ। গরমের এ সময়টায় তাই প্রাধান্য দিতে পারেন ডাবের পানি ও বিভিন্ন ধরনের ফলের জুসকে।
৫. মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এমন ব্যায়ামের অনুশীলন করতে পারেন। করতে পারেন আকুপ্রেশারও। হঠাৎ মাথাব্যথার সমস্যায় দ্রুত সমাধান পেতে বাঁহাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি এবং তর্জনীর মাঝখানের অংশে অন্য হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনী দিয়ে চাপ দিন এবং ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করুন। একইভাবে ডান হাতেও করুন। ৩০ বার ধীরে ধীরে চাপ দেয়ার কারণে এক মিনিটেই আপনার মাথাব্যথা দূর হয়ে যাবে বলে মনে করেন আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞরা।
৬. এসব মেনে চলার পরও যদি তীব্র গরমে মাথাব্যথা সমস্যা না কমে, তবে প্রথমেই মুখে বেশি করে পানির ঝাপটা দিন। মাথার তালুতেও পানির ঝাপটা দিতে পারেন। সম্ভব হলে গোসল করে নিতে পারেন।
৭. গরমের কারণে সৃষ্ট মাথাব্যথা দ্রুত সারিয়ে তুলতে এক টুকরো বরফ মুখে ও মাথার তালুতে ঘষে নিন। এতে খুব দ্রুত আরাম অনুভব করবেন।
৮. পানি ঝাপটা দেওয়ার পর তা কোনোভাবেই তোয়ালে দিয়ে মুছতে যাবেন না। ফ্যানের বাতাসে তা শুকিয়ে নিন। এতে আপনার নির্জীব ত্বক অনেকটাই প্রাণ ফিরে পাবে।
৯. এরপর পান করুন ঠান্ডা পানীয় বা ঠান্ডা ফলের জুস। অতি গরমে শরীর ড্রিহাইড্রেটেড হয়ে গেলে তা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই ঠান্ডা পানীয় বা ফলের জুসের কারণে মাথাব্যথা অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে থাকবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
১০. ব্যথা বেশি অনুভূত হলে ঘরের আলো নিভিয়ে দুই ঘণ্টার জন্য একটু ঘুমিয়ে নিতে পারেন। ব্যস, ঘুম থেকে উঠেই মাথাব্যথা গায়েব হয়ে যাবে।
১১. যাদের সাইনাস বা মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে, তারা ঘুমাতে যাওয়ার আগে কপালে মাথাব্যথা কমানোর বাম লাগাতে পারেন।
তীব্র গরমে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, রাত জেগে থাকা এবং একটানা কাজের অভ্যাসেও মাথাব্যথার সমস্যায় ভুগতে পারেন আপনি। তাই এই অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে চেষ্টা করুন। অনেক ক্ষেত্রে ধূমপান ও মদপানের কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে। তাই এই বদভ্যাস থাকলে মাথাব্যথা থেকে রেহাই পেতে এগুলোও ছাড়তে হবে আপনাকে।